আপনি কি ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন? পুজো বা যে কোনো উৎসবে শাড়ির প্রাধান্য সবথেকে বেশি থাকে। ভারতের সংস্কৃতির একটি অঙ্গ হল এই শাড়ি। উৎসব হোক কিংবা বিয়ে বাড়ি, যে কোন অনুষ্ঠানে শাড়ির মাধ্যমে যেকোন স্টাইল বহন করা যায়। এইজন্য শাড়ি ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত। সামনে আসতে চলেছে একের পর এক উৎসব। আপনি যদি এই উৎসবের মুখে শাড়ির ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে কিভাবে শাড়ির ব্যবসা শুরু করবেন? কোথা থেকে পাইকারি শাড়ি কিনবেন? বিক্রি কোথায় করবেন? এই সকল তথ্য নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন। ব্যবসা শুরু করার আগে সবচেয়ে প্রথম দরকার হলো মূলধন। প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে প্রথমেই অনেক বেশি মূলধন থাকেনা ব্যবসায় বিনিয়োগ করার জন্য। আপনি যদি প্রথম শাড়ির ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে প্রথমদিকে অল্প মূলধন বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করুন। পাইকারি বাজার থেকে কম দামে শাড়ি কিনে এনে বিক্রি করার চেষ্টা করুন। এর ফলে আপনার হাতের লাভের পরিমাণ বেশি থাকবে। বিক্রির হার বাড়ার পর মূলধনের পরিমাণ বাড়িয়ে আরো বেশি শাড়ি স্টক করুন। অনেকেই শাড়ির ব্যবসা শুরু করার কথা চিন্তা করলেও কোথা থেকে শাড়ি কিনবেন সেটা ভেবে পান না। আজকের এই প্রতিবেদনে পাইকারি কিছু শাড়ির বাজারের সন্ধান দেব।
একটি শাড়ির ব্যবসা শুরু করতে গেলে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে ব্যবসায় নামা উচিত। আপনাকে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ধরনের শাড়ি বেছে নিতে হবে। এরপর পাইকারি বিক্রেতা বা প্রস্তুতকারকদের থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হবে। বিক্রির জন্য বা আপনার ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি স্থায়ী দোকান বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বেছে নিতে হবে।
ভারতের বিভিন্ন জায়গায় শাড়ির পাইকারি বাজার রয়েছে। এখান থেকে আপনি অনেক কম দামে নির্দিষ্ট ধরনের শাড়ি পেয়ে যাবেন। ভারতের কিছু নামকরা পাইকারি বাজারে সন্ধান এখানে দেওয়া হলো।
আরোও পড়ুন:- কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন প্রকল্পে মহিলারা পাবেন ৫০০০- ৭০০০ টাকা প্রতি মাসে
সুরাট (গুজরাট):– শাড়ির রাজধানী হিসেবে এই শহরটি বহুল জনপ্রিয়। শাড়ির পাইকারি বাজার বলতে প্রধানত সুরাটকেই বোঝায়। ঐতিহ্যবাহী সিল্ক এবং জরির শাড়ি থেকে শুরু করে আধুনিক ধরনের শাড়ি এখানে আপনি পেয়ে যাবেন।
মুম্বাই (মহারাষ্ট্র):– মুম্বাইয়ের পাইকারি বাজারে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়। ডিজাইনার রেপ্লিকা থেকে শুরু করে সস্তার দৈনন্দিন পড়ার শাড়ি মুম্বাইয়ের পেয়ে যাবেন।
দিল্লি (দিল্লি):– দিল্লির বিভিন্ন শাড়ির পাইকারি দোকানে উত্তর ভারতের স্টাইল করা শাড়ি খুব জনপ্রিয়। এছাড়াও এখানে পুরনো ও নতুন উভয় ধরনের শাড়ি পেয়ে যাবেন পাইকারি দামে।
কলকাতা (পশ্চিমবঙ্গ):– কলকাতা তার সিল্ক শাড়ি এবং তাঁতের শাড়ির জন্য বিখ্যাত। কলকাতার বড়বাজার, গড়িয়াহাট, ধর্মতলা এই জায়গাগুলিতে বিভিন্ন পাইকারি শাড়ির বাজার রয়েছে। অনেক কম মূল্যে এখান থেকে আপনি শাড়ি কিনে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
এছাড়াও শান্তিপুরের থেকে তাঁতের শাড়ি ও জামদানি খুবই কম দামে কিনে আপনি শাড়ির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। শান্তিপুরেও প্রচুর পাইকারি বাজার রয়েছে যেখান থেকে আপনি সুলভ মূল্যে ব্যবসার জন্য শাড়ি কিনতে পারবেন।
শাড়ি ব্যবসায় কিভাবে লাভ করবেন :-
শাড়ির ব্যবসা থেকে লাভ করতে হলে আপনাকে একটি ব্যবসার সঠিক মডেল বা প্লান তৈরি করতে হবে। প্রথমেই আপনাকে পাইকারি বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, অনলাইন পদ্ধতিতে বিক্রির পরিমাণ বাড়ানো জরুরি। ভালো মানের পণ্য নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া সঠিক মার্কেটিং কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
বিক্রির মাধ্যম :- আপনি নিজের বাড়িতে শাড়ির স্টক রাখতে পারেন। আপনার চেনাজানা মানুষজন আপনার বাড়ি থেকে শাড়ি নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে বাড়ির সামনে ব্যানার লাগাবেন, যাতে সবাই বুঝতে পারে আপনার বাড়িতে শাড়ি বিক্রি করা হয়।
এছাড়া বাজারের মধ্যে কোনো দোকানে শাড়ি সাপ্লাই করতে পারবেন।
বর্তমানে সোশ্যাল মাধ্যমে ফেসবুক, ইনস্টা পেজ তৈরি করে অ্যাড দিতে পারেন। কন্টাক্ট নাম্বার দিয়ে দেবেন। এর ফলে অনেকেই আপনার সাথে যোগাযোগ করে শাড়ি কিনবেন। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে (যেমন Amazon, Flipkart, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে (যেমন Meesho) তে বিক্রি করতে পারেন।
সব সময় ব্যবসা শুরু করার আগে মনে রাখবেন, যেকোনো ব্যবসা শুরু করতে হলে দরকার একনিষ্ঠতা এবং কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। প্রথমেই কোন ব্যবসা থেকে অনেক লাভ হয় না, তাই ধৈর্য সহকারে ব্যবসা করতে থাকলে আপনার ব্যবসার যত পরিচিতি পাবে ততই আপনার ব্যবসার সম্প্রসারণ হবে। তাহলে আপনি যদি এই প্রথম শাড়ীর আপা শুরু করতে চাইছেন তাহলে প্রথমেই কাছাকাছি পাইকারি দোকান গুলোর সাথে কথা বলে যে ধরনের শাড়ি রাখতে চাইছেন সেরকম স্টক তুলে ব্যবসা শুরু করুন।

