আপনার কাছে যদি অল্প মূলধন থাকে অথচ আপনার ব্যবসা করার ইচ্ছে রয়েছে কিন্তু এই অল্প মূলধন বিনিয়োগ করে কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন ভাবছেন? আজকের এই প্রতিবেদনে এমন একটি ব্যবসা করার সন্ধান দেবো আপনাদেরকে, যেখানে মাত্র ২০০০ টাকা ইনভেস্ট করে আপনি মাসিক ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করার সুবর্ণ সুযোগ পাবেন। বর্তমানে সময়ে দাঁড়িয়ে ঘরে ঘরে বেকার যুবক যুবতীর সংখ্যা বাড়ছে। চাকরির জন্য অপেক্ষা করে না থেকে নিজের স্বাধীনতায় ছোট ব্যবসা শুরু করা অনেক লাভজনক। এছাড়া বর্তমান সময়ে যেভাবে জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া সেখানে একটি মাত্র আয়ের উৎস না থেকে যদি একের অধিক আয়ের উৎস থাকে তাহলে জীবনযাত্রা মান বজায় রাখতে অনেকটাই সহজতর হয়ে যায়। আজকে যে ব্যবসার কথা আপনাদেরকে বলব সেই ব্যবসা কলেজ স্টুডেন্ট, গৃহবধূ এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা শুরু করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি একজন বেকার যুবক-যুবতী হয়ে থাকেন, তাহলে এই ব্যবসার মাধ্যমে হাতেখড়ি দিয়ে একদিন আপনার স্বপ্ন সফল করার সুযোগ পাবেন। দেখে নেওয়া যাক কোন ব্যবসায় কম ইনভেস্ট বিপুল লাভ রয়েছে?
আপনি যদি বাড়িতে পটেড প্ল্যান্ট / নার্সারি ব্যবসা শুরু করেন তাহলে খুব বেশি মূলধন ইনভেস্ট করার প্রয়োজন পড়বে না। বর্তমান সময়ে এই নার্সারীর ব্যবসার খুব চাহিদা রয়েছে। এখনকার সময়ে প্রত্যেক ঘরে ঘরে ইনডোর প্লান্ট এবং ছাদে বিভিন্ন রকম গাছ দিয়ে সাজানোর ঝোঁক মানুষের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘরের একটি প্রান্ত, ব্যালকনি কিংবা ছাদ এক টুকরো সবুজে ভরিয়ে তুলতে প্রত্যেক ব্যক্তিই পছন্দ করে। এই এক টুকরো সবুজ শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তাই নয়, অক্সিজেনের যোগান দেয় এবং একটা পজিটিভ এনার্জি ক্রিয়েট করে। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার খুব বেশি টাকা ইনভেস্ট করতে হবে না।
ব্যবসার কাঁচামাল :- প্রথমে ২০০০ টাকা খরচ করে কিছু টব, মাটি, সার, কয়েকটি মানি প্ল্যান্ট বা সাক্যুলেন্ট কিনলেই শুরু করা যাবে এই ব্যবসা। বাড়ির মধ্যে এক কোণে অল্প পরিসর জায়গাতেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আপনার বিক্রি বাড়লে আরো কিছু গাছ এবং টব যুক্ত করে ব্যবসার পরিধি বাড়াবেন।
আরোও পড়ুন:- আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলের শেষ তারিখ বর্ধিত করা হলো, ৩১ জুলাই, ২০২৫ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে
কোন গাছগুলি প্রথমে রাখবেন :- বর্তমান সময়ে ইনডোর প্ল্যান্টের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এইজন্য মানি প্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, ব্যাম্বু ট্রি, স্নেক প্ল্যান্ট, টিউলিপ বা অর্কিড, সাক্যুলেন্ট, সতুলসি বা ঔষধি গাছ রাখতে পারেন।
বিক্রি করার জন্য যে জায়গা গুলো বেছে নেবেন সেগুলো হলো :- লোকাল মার্কেট বা মেলা, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম (Amazon, Flipkart, Meesho), ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম পেজ তৈরি করে। হোম ডেলিভারি সার্ভিস রাখার চেষ্টা করবেন।
কিভাবে মাসিক ৪০,০০০ টাকা আয় করবেন :-
একটি ছোট পটেড প্ল্যান্টের দাম যদি 100-200 টাকা রাখেন, যদি দিনে ৫ থেকে ৬ টি গাছ বিক্রি হয়, তাহলে দিনে আয় হবে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা। মাসিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করা সুযোগ থাকবে।
এই ব্যবসা সম্প্রসারণ ঘটানোর জন্য বর্তমানে সোশ্যাল মাধ্যমকে কাজে লাগাতে পারেন। আপনি একটি ফেসবুকে কিংবা ইনস্টাগ্রামে পেজ তৈরি করে অনেকগুলো গাছের ছবি দিয়ে আপনার কন্টাক্ট নাম্বার দিয়ে রাখতে পারেন। এই পেজ যত শেয়ার হবে ততই আপনার ব্যবসা সম্বন্ধে সবাই জানতে পারবে। আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করলে গাছ বিক্রির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
কেন এই ব্যবসা লাভজনক :-
১) অল্প টাকা ইনভেস্ট করে বেশি টাকা আয় সুযোগ রয়েছে। খুব অল্প পরিমাণ কাঁচামাল প্রয়োজন হয়।
২) ব্যবসার করার জন্য খুব বেশি জায়গা প্রয়োজন হয় না।
৩) বর্তমানে গাছের প্রতি মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
৪) একবার গাছ কিনে নিলে কাটিং থেকে আরো অনেক কাজ তৈরি করতে পারবেন।
৫) হোম ডেলিভারি এবং অনলাইন অর্ডার চালু করলে আয় বেশি হবে।
এজন্য আপনি যদি এখনো কোন ব্যবসা শুরু করবেন না ভেবে থাকেন তাহলে সব থেকে ভালো বিকল্প হতে পারে এই নার্সারি ব্যবসা। এই ব্যবসায় কম টাকা ইনভেস্ট করে বেশি টাকা আয় করার সুযোগ পাবেন, এছাড়া এই ব্যবসা আপনি বাড়ি বসে করতে পারবেন। বেশি পরিসর জায়গার প্রয়োজন হবে না এবং খাটনিও কম। সবমিলিয়ে অল্প মূলধন বিনিয়োগ করে বেশি টাকা আয় করার সেরা সুযোগ হলো নার্সারীর ব্যবসা।