কৃষকদের অভাব দূরীকরণ করতে পাশে দাঁড়ালো কৃষি বিপণন দপ্তর, এবার সরাসরি কৃষকদের থেকে আলু কেনার ভাবনা কৃষি বিপণন দপ্তরের

ভারত বর্ষ কৃষি প্রধান দেশ, ভারতবর্ষের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যদিও কৃষি কাজের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করেন কৃষকরা, তবে তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন উন্নত নয়। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ ঝড়-বৃষ্টি, বন্যা হওয়ার ফলে অনেক সময় ফসলের মারাত্মক রকম ক্ষতি হয়। এর ফলে যে পরিমাণ টাকা দিয়ে ফসল উৎপাদন করেছিলেন কৃষকরা, তার বেশিরভাগ টাই নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্য কপালে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। বিশেষ করে বিবর্ণ জেলার প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র চাষীদের এই দুর্ভোগ বেশি দেখা যায়। এর জন্য রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তর কৃষকদের পাশে দাঁড়ান তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা সুরক্ষিত করার জন্য। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসল ক্ষতি হলে মুখ্যমন্ত্রী তরফ থেকেও ঋণ পাওয়া যায়। এই বছর অর্থাৎ 2025 সালে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে যার জন্য অনেক ফসল জলের তলায় থাকার দরুন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলু। আলু গাছের গোড়ায় জল থাকার জন্য অনেক আলু পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পুজোর আগে চাষীদের মাথায় হাত পড়েছে। বিশেষ করে বীরভূম জেলার ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষীদের এই খারাপ অবস্থার জন্য তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কৃষি বিপণন দপ্তর। কৃষকদের বিক্রি না হওয়া আলু এবার সরাসরি হিমঘর থেকে অতএব রেডি আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষি বিপণন দপ্তর। ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বীরভূম জেলার কৃষি বিপণন দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, হিমঘর থেকে রেডি আলু কিনে নেওয়া হবে শুধুমাত্র এই জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে, অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে না হয়।

সেইমতো হিমঘরে মজুত রেডি আলু সরাসরি চাষিদের থেকে ন্যায্য মূল্যে কিনে নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে সুফল বাংলার মাধ্যমে সেই আলু স্কুলের মিড-ডে মিলে পাঠানো হচ্ছে চাষিদের হাত ধরে। এছাড়াও শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ স্টলেও সেই আলু বিক্রি করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন চাষিরা উপকৃত হচ্ছেন, তেমনই সাধারণ মানুষও ন্যায্য দামে আলু পাবেন। প্রায়শই কৃষিকাজ শেষে আলুর সঠিক দর না পেয়ে চাষিদের একাংশের হতাশা দেখা যায়। বহু ক্ষেত্রে অভাবী বিক্রির মুখেও পড়তে হয়। সমস্যা সমাধানে এবছরই প্রথম জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনা হয়েছিল। বোলপুর উত্তর অজয় কৃষক সমবায় হিমঘর ও নলহাটি সিএডিপি সমবায় হিমঘর চত্বরে সুফল বাংলার তরফে আলু কেনা হয়েছিল। সেইসঙ্গে চাষিদের দাবি মেনে জেলার নানা প্রান্তে অস্থায়ী শিবিরের মাধ্যমেও আলু কেনা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে প্রতি কেজি ১০টাকা করে মূল্য পেয়েছিলেন চাষিরা। এবার দ্বিতীয় ধাপে চাষিদের থেকে আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু হল। কৃষি বিপণন দপ্তরের নয়া এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে জেলার প্রায় ১৫ জন প্রান্তিক চাষি উপকৃত হয়েছেন।

কৃষকদের থেকে আলু কেনা

কৃষি বিপণন দপ্তরের জেলা আধিকারিক রাকেশ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বীরভূম জেলার ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে ন্যায্য দামেই আলু কিনে নেবেন তারা। এর পরবর্তীতে সুফল বাংলা মাধ্যমে এই আলো গুলোই বিভিন্ন জেলার স্কুলের মিড ডে মিলে পাঠানো হবে। শুধু তাই নয় শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রামীন এলাকায় ভ্রাম্যমান স্টলেও সে আলো বিক্রি করা হবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ যেমন ন্যায্য দামে আলো ক্রয় করতে পারবেন, অনুরূপভাবে চাষী ভাইদের হিম করে পড়ে থাকা আলু ন্যায্য দামে বিক্রি হবে। ইতিমধ্যে এ প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বীরভূম জেলা ১৫ জন কৃষক উপকৃত হয়েছেন। তবেই প্রথম নয় এর আগেও এরকম প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য দামে আলু ক্রয় করেছিলেন কৃষি বিপণন দপ্তর।

আরোও পড়ুন:- ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য দারুন সুখবর, এখন এর থেকে আরও বেশি আয়ের সুযোগ!

সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৯১০ কুইন্টাল আলু কেনা হয়েছে বীরভূম জেলা চাষীদের কাছ থেকে। আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই পদ্ধতিতেই সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনার প্রক্রিয়া জারি থাকবে। ময়ূরেশ্বর-২ ব্লকের চাষি তাপস মণ্ডল জানিয়েছেন, এই বছর আলুর উৎপাদন অনেক বেশি হওয়ায়, এবং সেই অনুযায়ী বিক্রি না হওয়ায় হিমঘরে আলো গুলো নষ্ট হয়ে যাবার জোগাড় হয়েছিল। তবে কৃষি বিপণন দপ্তর তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় এই ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছেন ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষীরা।

Join Group Join Group