TCS প্রায় ১২,০০০ কর্মীকে ছাঁটাই করছে। মূলত যাদের কাজে খুব বেশি চাহিদা নেই, অথবা যারা নতুন টেকনোলজি শিখতে পারছেন না – তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। ঠিক তারই পড়ে আবার বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে টিসিএস। বেঞ্চিং পলিসিতে করা নিয়ম এনেছে। এক্ষেত্রে বেঞ্চিং পিরিয়ড কমিয়ে ৩৫ দিন করে দেয়া হয়েছে, অর্থাৎ কোন কর্মী যদি তাদের প্রোজেক্ট ছাড়া 35 দিন বসে থাকতে পারবেনা। এবং কর্মীদের হাতে ৩৫ দিন সময় দেওয়া হবে যদি নতুন প্রজেক্ট খুঁজে না পায় তাহলে তাদের ইস্তফা দিতে হবে চাকরি থেকে।
টাটা কনসাল্টেন্সি সার্ভিসের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, তারা ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে।এরই মধ্যে আবারো বড় ধাক্কা। আপাতত টিসিএস কোম্পানিতে নতুন নিয়োগ স্থগিত করে দিল। এর পাশাপাশি বেতন বৃদ্ধির কথা ছিল তাও বন্ধ করে দিল। কবে থেকে বেতন বৃদ্ধি করা হবে সে সম্পর্কে এখনো কোন কিছুই জানানো হয়নি সংস্থার তরফ থেকে। ইতিমধ্যে হায়দ্রাবাদ,পুন, চেন্নাই ও কলকাতা টিসিএস এর অফিসে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে এবং কর্মীদের ছাটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
টিসিএসে মাঝারি ও সিনিয়র স্তরে কর্মীদের যে ছাটাই এর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাতে সংস্থার ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২৪০০-৩৬০০কোটি টাকা) সাশ্রয় হবে বাড়তি এমনটাই অনুমান। টিসিএসের সিইও জানিয়েছে ধাপে ধাপে এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া করা হবে।
নতুন নিয়ম:- যদি কেউ বছরে ৩৫ দিনের বেশি কোনো প্রজেক্টে না থাকেন, তাহলে বেতন বাড়বে না, এবং ভবিষ্যতে প্রজেক্টে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে। এছাড়া আগের মতো বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ আর থাকছে না। এখন সবাইকে অফিসে আসতেই হবে বাধ্যতামূলক।
নতুন অফিস:- বাংলাতেও বড় ক্যাম্পাস আনছে টিসিএস।কলকাতার নিউটাউনে বড় অফিস বানাচ্ছে, যেখানে অনেক চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। TCS বলছে, তারা তাদের কর্মী কাঠামোকে পুরোনো পিরামিড মডেল থেকে ডায়মন্ড মডেলে আনছে, মানে মাঝখানের কম অভিজ্ঞ কর্মী যাদের খরচ বেশি, তাদের সংখ্যা কমিয়ে নিচ্ছে। যারা ছাঁটাই হচ্ছেন, তারা কিছু সুবিধাও পাচ্ছেন – যেমন সেভারেন্স প্যাকেজ, PF, ইনসেন্টিভ এবং কারও কারও জন্য তিন মাসের নোটিশ পিরিয়ড। তবে এই ছাঁটাই কেবল একবারেই শেষ হবে না, আগামী দিনে আরও ধাপে ধাপে হতে পারে।
এর পাশাপাশি কোম্পানি নতুন নিয়ম চালু করেছে – যদি কেউ বছরে ৩৫ দিনের বেশি কোনো প্রজেক্টে না থাকেন, তাহলে তার ইনক্রিমেন্ট বা বেতনবৃদ্ধি হবে না। সবাইকে অফিসে আসতে হবে, ওয়ার্ক ফ্রম হোম ধীরে ধীরে বন্ধ হচ্ছে। যারা ভালো কাজ করছেন এবং প্রজেক্টে নিয়মিত যুক্ত, তাদের ভ্যারিয়েবল বেতন (বোনাস) পুরোটাই দেওয়া হয়েছে।
TCS আবারও নতুন কর্মী নিচ্ছে – প্রায় ৪২,০০০ নতুন ফ্রেশার নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন অফিস ও ক্যাম্পাস খুলছে।
সব মিলিয়ে, যাদের কাজের দক্ষতা নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানানসই নয়, বা যারা প্রজেক্টে নেই, তাদের ঝুঁকি আছে। এখন সময় – নিজেকে আপডেট করার, AI ও ক্লাউড-এর মতো টেকনোলজি শেখার, নিয়মিত কাজ করার এবং অফিসে উপস্থিত থাকার।