ডেয়ারি ব্যবসা করতে সরকার দিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ব্যবসা সংক্রান্ত সহায়তা আইডিয়া জানুন!

আপনি যদি ডেয়ারি ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আর্থিক সহায়তা পাবেন। গ্রামীণ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে এবং মান উন্নয়ন ঘটানোর জন্য গ্রামীণ এলাকার মানুষদের বিশেষ করে কৃষি ও পশুপালন জীবিকা নির্বাহী মানুষদের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে চালু করা হয়েছে দেয়ারই ফার্ম বিজনেস লোন ২০২৫। আপনি ব্যবসা শুরু করতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যবসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় মূলধন কেনার জন্য লোন দেওয়া হবে।

ডেয়ারি ফার্মিং বলতে কি বোঝা যায়?

গরু মহিষবা ছাগল পালন করে দুধ উৎপাদন এবং তা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে বাজারজাত করাকে ডেয়ারি ফার্মিং বলা হয়। গ্রাম্য অঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ এবং পশুপালনের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষিকাজ করার জন্য যেমন সরকার থেকে কোন প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা করা হয়, অনুরূপভাবে পশু পালনের মাধ্যমে ডেয়ারি শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটনার জন্যই সরকার থেকে লোন দেওয়া শুরু করে হয়েছে ২০২৫ থেকে।

গরু মহিষ ছাগলের দুধ থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম খাদ্য যেমন দুধ দই, ঘি পনির মাখন ইত্যাদি তৈরি হয়। এবং এই জিনিসগুলো বানানো এবং বিক্রি করার মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র গ্রামীণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক স্তম্ভ শক্তিশালী হবে তা নয়, শহরের অর্থনীতি অনেকটা শক্তিশালী হবে।

সরকার থেকে কত টাকা লোন দেওয়া হচ্ছে?


এই স্কিমের আওতায় ভারত সরকার ২৫,০০০ থেকে ₹১০,০০,০০০ পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকছে।
ছোট ব্যবসা ২৫,০০০ টাকা – ২,২,৫০টাকা
মাঝারি ব্যবসা ২,৫০,০০০ টাকা – ৫,০০,০০০ টাকা
বড় ফার্ম ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত

এই স্কিমের লক্ষ্য :-
১) যে সমস্ত ব্যক্তি নতুন করে ডেয়ারি ফার্ম শুরু করতে চাইছেন তাদের ব্যবসা মাধ্যমে অর্থনৈতিক পরিকাঠামো উন্নত হবে।
২) যাদের পুরনো ফার্ম রয়েছে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ হবে।
৩) আরো বেশি করে গরু বা মহিষ কিনতে পারবে।
৪) দুধ সংগ্রহ ও সংরক্ষণে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি কিনতে পারবে।

লোনের ধরণ ও ব্যবহার:-
১) সাধারণ ডেয়ারি ঋণ গরু, মহিষ বা ছাগল কেনার জন্য দেওয়া হয়।
২) ফার্ম নির্মাণ, যন্ত্রপাতি কেনা ও শেড তৈরি
৩) সাবসিডি যুক্ত লোন দেওয়া হয় সরকারের আর্থিক সহায়তা এবং কম সুদে

এই স্কিমের সুবিধা:-
১) যারা নিজের ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন তাদের ব্যবসা শুরু করার সুযোগ দিচ্ছে সরকার।
২) কৃষি নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প আয়ের উৎস করে দিচ্ছে সরকার।
৩) মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ছাড় ও সুবিধা দেওয়া হবে।
৪) সরকারের পক্ষ থেকে সাবসিডি ও কম সুদের হার দেওয়া হয় তারপরে সাধারণ মানুষের সুবিধা হচ্ছে।
৫) সরাসরি অ্যাকাউন্টে টাকা হস্তান্তর, কোনও দালাল প্রয়োজন নেই।

লোনের জন্য সুদের হার:-
সাধারণ সুদের হার ৭% – ১২% (ব্যাঙ্কভেদে ভিন্ন হতে পারে)
সরকারি সাবসিডি দেওয়া ২৫% – ৩৩% পর্যন্ত, নির্ভর করে কেন্দ্র বা রাজ্য স্কিমে।

এই স্কিমে আবেদন করার যোগ্যতা:-
১) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
২) আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
৩) আবেদনকারীর নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
৪) অন্য লোনের মতো ভালো ক্রেডিট স্কোর থাকতে হবে।
৫) পূর্বে অন্য কোনো ব্যাঙ্ক ঋণে ডিফল্ট করা চলবে না।
৬) ডেয়ারি ফার্মিংয়ের অভিজ্ঞতা বা প্রজেক্ট রিপোর্ট থাকা প্রয়োজন।

আবেদন প্রক্রিয়া:-
আপনার সর্বপ্রথম ব্যাংক নির্বাচন করতে হবে, এবং আপনার নিকটবর্তী সরকার অনুমোদিত ব্যাংক শাখায় যেতে হবে। এরপর পরিচয়পত্র (আধার/ভোটার/পাসপোর্ট), ঠিকানার প্রমাণ, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, প্রজেক্ট রিপোর্ট, পশু কেনার কোটেশন ইত্যাদি ডকুমেন্ট ব্যাংকে জমা দিয়ে, ব্যাংক থেকে পাওয়া আবেদনপত্র সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে। পরবর্তী ধাপে ব্যাঙ্ক অফিসার কিছু ক্ষেত্রে সাইট ভিজিটও করতে পারেন। এরপর লোন অনুমোদন হয়ে গেলে টাকা সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যাবে।

কৃষিভিত্তিক শিল্পের পাশাপাশি বিকল্প শিল্প হিসেবে ডেয়ারি ফার্ম ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটনার জন্য এবং গ্রামীণ অর্থনীতির সার্বিক উন্নয়ন করার জন্যই সরকারের তরফ থেকে ডেয়ারি ফার্ম বিজনেস ২০২৫ শুরু করা হয়েছে। আপনিও যদি ডেয়ারি ব্যবসা শুরু করতে চান বা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চান তাহলে অবশ্যই এই প্রকল্পে আবেদন করে যুক্ত হয়ে সরকারের তরফ থেকে লোন পাওয়ার সুবিধা গ্রহণ করুন।

Join Group Join Group