নিজের এলাকায় ATM বসিয়ে মাসে আয় করুন 60,000 টাকার মতন। জানুন আরও বিস্তারিত তথ্য।

বর্তমানে যেভাবে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বাড়ছে সেই অনুযায়ী শুধুমাত্র একক আয় বা একটি কর্মক্ষেত্র থেকে আয়ের উৎস না করে একের অধিক আয়ের উৎস তৈরি করা উচিত। এছাড়া যে সমস্ত ব্যক্তি চাকরির বদলে ব্যবসা শুরু করবেন বলে ভাবছেন, অথচ কি ব্যবসা শুরু করবেন যার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত আয় হতে পারে, সেটা ভেবে উঠতে পারছেন না, তাহলে আপনি ATM ফ্রাঞ্চাইজি নিতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত আয় করতে পারবেন। বর্তমানে চাকরি পাওয়ার সুযোগ অনেক সীমিত হয়ে গিয়েছে, ডিগ্রী অর্জন করেও ঘরে বেকার হয়ে বসে রয়েছেন অসংখ্য যুবক-যুবতীরা। আপনি যদি সঠিক ক্ষেত্রে টাকা ইনভেস্ট করে একটা নিশ্চিত আয় পেতে চান তাহলে সব থেকে উত্তম পন্থা হবে ATM ফ্রাঞ্চাইজি নেওয়া।

আপনি যদি একটি ভালো জায়গা দেখে ATM ফ্রাঞ্চাইজি নিতে পারেন তাহলে আপনার মাসে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতন আয় আসবে। বর্তমানে দেশের হাজার হাজার উদ্যোক্তা ATM ফ্রাঞ্চাইজি নিয়ে মোটা অঙ্কের ইনকাম করছেন। আপনিও যদি এই ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হন তাহলে কিভাবে করবেন ও এই বিষয়ে আরো তথ্য জানার জন্য নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ATM ফ্রাঞ্চাইজি ব্যবসা কি:- আমরা প্রত্যেকেই এটিএম সম্পর্কে অবগত। এটিএম হচ্ছে টাকা তোলার মেশিন। যেকোনো সময় যেকোনো প্রয়োজনে এটিএম কার্ড থাকলে এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলা যায় খুব সহজে। কিন্তু এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি ব্যবসা কি? এই বিষয়ে অনেকেই অবগত নয়। এটি একটি এমন ধরনের ব্যবসা যেখানে ব্যাংক বা অনুমোদিত কোম্পানি আপনার চেনা জানা লোকেশনে একটি ATM বসাতে অনুমতি দেয়। এর মাধ্যমে আপনি আপনার চেনা জানা নির্দিষ্ট জায়গায় এটিএম মেশিন বসিয়ে মাসে প্রচুর টাকা উপার্জন করতে পারবেন। আপনার যদি রাস্তার পাশে বাড়ি হয়ে থাকে এবং আপনার রাস্তার সঙ্গে যদি আপনার কোন দোকান বা ঘর থাকে তাহলে আপনি এই ব্যবসা অনায়াসে শুরু করতে পারবেন। এছাড়া আপনি বাজারে বা কোন এলাকার ঘর ভাড়া নিয়েও এটিএম মেশিন বসিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আপনি যদি এটিএম মেশিন বসান এবং সেই এটিএম মেশিন ব্যবহার করে যদি কেউ টাকা তোলে, ব্যালেন্স চেক করবে, মিনি স্টেটমেন্ট নেবে তাহলে আপনি তার পরিবর্তে একটা কমিশন পাবেন। অর্থাৎ যত বেশি ট্রানজাকশন হবে, ততই আপনার লাভের পরিমাণ বাড়বে। আপনাকে সবসময় এটিএম এর সামনে বসে থাকতেও হবে না। অর্থাৎ আপনাকে এই ব্যবসার জন্য ব্যক্তিগতভাবে কোন সময় দিতে হবে না। শুধুমাত্র লোকেশন ভালো হলে এবং মানুষ যদি এই এটিএম নিয়মিত ব্যবহার করে এমন পজিশনে এটিএম থাকলে আপনার ব্যবসা থেকে লাভ দিন প্রতিদিন বৃদ্ধি পাবে। এইজন্য আপনি যদি একটি নিশ্চিত আয়ের উৎস খুঁজতে চান তাহলে এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি ব্যবসা সবথেকে উত্তম পন্থা।

আরোও পড়ুন:- অষ্টম শ্রেণী পাশে পেয়ে যান প্রত্যেক মাসে ১৫০০ টাকা করে, রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে আবেদন করুন এই পদ্ধতিতে!

এই ব্যবসা লাভজনক কেন

এখনো পর্যন্ত ভারতে বেশিরভাগ মানুষ নগদ লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এইজন্য এটিএম মেশিনের খুবই ব্যবহার রয়েছে। এটিএম এর চাহিদাও রয়েছে অপরিসীম। অনেক গ্রামগঞ্জে এটিএম মেশিন অনেক দূরে থাকার জন্য মানুষজনকে অনেক দূর পর্যন্ত কষ্ট করে যেতে হয়। আপনি যদি আপনার বাড়ির মধ্যেই এটিএম মেশিন বসান তাহলে গ্রামের মানুষদের অনেক সুবিধা হবে। আর তাদের যেমন সুবিধা হবে, তারফলে আপনার আয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। আর এই ব্যবসা কোনরকম ঝুঁকির ব্যাপার নেই। একবার এটিএম প্রতিস্থাপন করতে পারলে আর কখনোই ঝামেলা পোহাতে হয় না। এছাড়া এই ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। যেহেতু মানুষের টাকার প্রয়োজন সারা জীবন ধরেই চলবে এবং নিত্যদিন টাকা তুলতে হবে তার জন্য এই ব্যবসা আপনার কখনো লসে যাবে না।

বিনিয়োগ খরচ কত:- এটিএম শুরু করতে গেলে প্রথমে ২ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে আপনার যদি নিজস্ব ঘর থাকে তাহলে ঘর ভাড়া দেওয়ার জন্য মাসিক টাকা খরচ হবে না। এর জন্য খরচটা অনেক কম হবে। এছাড়াও এয়ার কন্ডিশনার (AC), UPS/Power Backup, CCTV ক্যামেরা, সাইনবোর্ড এজন্য আপনার সামান্য কিছু টাকা খরচ হতে পারে। তবে প্রথম দিকে যে পরিমাণ বিনিয়োগ খরচ হবে সেটা একবারই। ভালো মতন পরিসরে, যদি আপনি এটিএম মেশিন বসাতে পারেন তাহলে মাসে মাসে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করলেই কয়েক মাসে আপনার বিনিয়োগ করা টাকা উঠে আসবে আপনার আয় থেকে।

কোন কোন কোম্পানি এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি দিয়ে থাকে


বর্তমানে যে কোম্পানিগুলো এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি দিচ্ছে সেগুলি হল :-
Tata Indicash
Hitachi Payment Services
India1 ATM
Muthoot ATM
SBI (State Bank of India) এই কোম্পানিগুলোতে আপনি সরাসরি কিংবা অনলাইনে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে পারেন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:- আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার আইডি, দোকান ভাড়ার কাগজ বা জমির মালিকানার দলিল, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, সিসিটিভি ইনস্টলেশন রিপোর্ট। আবেদনপত্র এবং আপনার সমস্ত ডকুমেন্ট যাচাই করার পরই কোম্পানির তরফ থেকে এটিএম বসানোর জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে আপনাকে।

এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি নেওয়ার পর কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে

এটিএম বসানোর পরে এটিএম মেশিন থাকার ঘরে অবশ্যই সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে এবং সেটিকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। নিরাপত্তার দিকটি আপনাকে সবসময়ই নজরদারি করতে হবে।
এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি নেওয়ার জন্য আবেদন করার আগে সঠিক কোম্পানিকে টাকা দিচ্ছেন কিনা কিংবা আবেদন করছেন কিনা সেটি আগে যাচাই করে নেবেন। অনেক সময় অনেক ভুয়ো সংস্থা অনেক প্রতারণা করে থাকে তাই অনুমোদিত ওয়েবসাইট থেকেই আবেদন করবেন।
তবে যদি আপনি সঠিক কোম্পানি বা ব্যাংকের তরফ থেকে এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি এর জন্য আবেদন করেন এবং একটি সঠিক জায়গা দেখে এটিএম বসাতে পারেন তাহলে প্রত্যেক মাসে নিশ্চিত লাভ আপনার উঠে আসবে এই ব্যবসা থেকে। একবার বেশি টাকা দিয়ে বিনিয়োগ খরচ করে প্রত্যেক মাসে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিশ্চিত আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে এটিএম ফ্রাঞ্চাইজি ব্যবসা। যদি আপনি কোন ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক থাকেন তাহলে এই ব্যবসা শুরু করার মধ্য দিয়ে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করার ভাবনা ভাবতে পারেন।

Join Group Join Group