সোনা এমন একটি ধাতু, যার দাম প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা ও সরবরাহ অনুযায়ী ওঠা নামা করে। কখনো সোনার দামের উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যায়, কখনো নিম্নগতি লক্ষ্য করা যায়। সোনার অলংকার শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই নয়, এটি ভবিষ্যতের অর্থ সঞ্চয় হিসেবে অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শারদ উৎসব কাটিয়ে আস্তে আস্তে আসতে চলেছে অন্যান্য উৎসব। এসব উৎসবের মধ্যে রয়েছে দীপাবলি, ধনতেরাস ও ছট পুজো। দীপাবলি ও ধনতেরাসের সময় সোনার অলংকার কেনার একটা রীতি রেওয়াজ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সোনার দাম এতটাই আকাশছোঁয়া, যে মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে সোনায় হাত দেওয়া অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ধনতের সময় সোনার অলংকার কেনার নিয়ম অনেকেরই থাকে। দীপাবলীর সময় সোনার দাম কতটা কম হতে পারে বা কতটা বেশি হতে পারে সেই ব্যাপারে আজকের প্রতিবেদনে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া রইল।
আন্তর্জাতিক বাজারের প্রবণতা ও চাহিদা-সরবরাহ এসবের উপরেই নির্ভর করে সোনার দাম। আসন্ন দীপাবলি ও ধনতেরাসে সোনার দাম কি কমবে? নাকি প্রতি ১০ গ্রামে ১.৫ লাখ থেকে ২ লাখ টাকায় পৌঁছাবে? ভারতীয় ঐতিহ্যে উৎসবের মরশুমে সোনা ও রুপো কেনা অনেকে শুভ বলে মনে করে থাকেন। এইজন্য অল্প হলেও সোনা বা রুপার অলংকার কিনে থাকেন অনেকেই। কিন্তু সোনার দাম যেভাবে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে কি মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে সোনায় হাত দেওয়া সম্ভব হবে আদৌ?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যেহেতু বিগত বছরের সোনা ও রুপা ৫০ শতাংশের মতো রিটার্ন দিয়েছে, তাই আগামী দিনে সোনার দাম কিছুটা হলেও কমতে পারে। তিনি বলেন, আগামী ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে সোনার দামে পতন লক্ষ্য করা যাবে। রুপোর বিষয়ে তিনি বলেন, রুপোও সোনার মতোই রিটার্ন দিয়েছে, তবে চাহিদা বেশি থাকায় আগামী দিনে রুপোর দাম নাও কমতে পারে।
দীপাবলি ও ধনতেরাসের সময় কত হতে পারে দাম:-
২৬ শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ দিল্লির সোনার বাজারে ২৪ ক্যারেট ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ১,১৬,৭০০ টাকা।
সোনার দাম কত কমতে পারে২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ দিল্লির সোনার বাজারে ২৪ ক্যারেটের ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ১,১৬,৭০০ টাকা। তবে, রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হলে অথবা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারতের উপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করলে সোনার দাম আরও বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বিগত ছয় থেকে আট মাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের উপর শুল্ক আরব করার ফলে সোনার দাম অনেকটাই বেড়েছিল। এইজন্য দেখা গিয়েছিল, বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজার ছেড়ে নিরাপদ রিটার্ন পেতে সোনায় বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে কয়েক মাসের মধ্যে সোনার দাম কিছুটা হলেও কমতে পারে।
আরোও পড়ুন:- ১২০০০ নয়, TCS আসলে ৮০,০০০ কর্মী ছাঁটাই, গোপন রিপোর্ট কি বলছে
অন্যদিকে, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ দিল্লির বাজারে ১ কেজি রুপোর দাম ছিল ১,৪১,৭০০ লাখ টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, রুপোর দামে কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে না। মানুষ যদিও রুপার ধাতুতে বিনিয়োগ কম করে থাকেন তবেও রুপার ধাতুতে তেমন কোন চাহিদা কমবে না বলেই জানা যাচ্ছে। কারণ বৈদ্যুতিক খাতে রুপোর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে সেই মতন রুপের উৎপাদন এখনো পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়নি। এই জন্য রূপোর চাহিদা রয়েছে। বিশ্ব বাজারের উপর দাম একই রকম থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে দীপাবলি ও ধনতেরাসের সময় সোনার ধাতুতে কিছুটা হলেও দাম কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে মধ্যবিত্ত মানুষদের দীপাবলি ও ধনতেরাসে সোনার অলংকার কেনা অনেক সহজলভ্য হবে।
আপনি যদি সোনার অলংকার কিনতে চাইছেন তাহলে দাম কম থাকা অবস্থাতেই কিনে রাখুন। এছাড়া পুজো পেরিয়ে গেলে আসতে শীতের মরশুম। শীত মানেই বিয়ের তোড়জোর। বিয়েতে সোনার অলংকার কেনার চাহিদা যেহেতু বেশি থাকে, তাই সোনার দাম একটু কম থাকার সময়েই সোনার অলংকার কিনে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। সোনা কিনে সঞ্চয় করে রাখলেও এটি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই, বরং এটি ভবিষ্যতের অর্থ সঞ্চয় এর একটি মূল ভান্ডার। এক কথায় বলতে গেলে, বিশেষজ্ঞদের মতে, সোনার দাম কিছুটা কমলেও রুপোর দাম একই থাকছে।