দূরদূরান্তে ভ্রমণের জন্য দূরপাল্লার ট্রেন সবথেকে সহজ এবং স্বল্পদামের মধ্যে দুর্দান্ত যাত্রার অংশ। পাহাড় হোক কিংবা সমুদ্র বা ঘন জঙ্গল প্রত্যেকটি ব্যক্তি ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকে। প্রত্যেকদিন অনলাইন মাধ্যমে কিংবা অফলাইনে দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রা করার জন্য টিকিট বুকিং করে হাজার হাজার যাত্রীরা। অনলাইন টিকিট বুকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম সমস্যা ফেস করতে হয় যাত্রীদের। তবে ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে রেলওয়ে তরফে এই টিকিট বুকিং এর ক্ষেত্রে আরো নিত্যনতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে। আপনি যদি এখন থেকে ট্রেনের টিকিট কাটেন তাহলে এই নিয়মগুলো অবশ্যই আপনাকে মেনে চলতে হবে। এই নিয়ম গুলোর না অনুসরণ করলে ট্রেনের টিকিট বুকিং করতে আপনার সমস্যা হবে। আজকের এই প্রতিবেদনে ভারতীয় রেলওয়েতে ভ্রমণ করার জন্য অনলাইন টিকিট বুকিং করার আগে যে নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো এই প্রতিবেদনে। সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন, তাহলে রেলওয়ের তরফে চালু করা নিয়ম গুলো সম্পর্কে আপনি অবগত হতে পারবেন।
১) টিকিট বুকিং ক্ষেত্রে:- এতদিন পর্যন্ত আমরা দেখেছি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আধার কার্ডের সঙ্গে প্যান কার্ড লিঙ্ক বাধ্যতামূলক করেছিলেন। তবে এইবার শুধুমাত্র আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করলেই হবে না, আপনি যদি ভারতীয় রেলওয়েতে ভ্রমণ করেন এবং তার জন্য টিকিট বুকিং করতে হলে আপনাকে আইআরসিটিসির একাউন্টের সঙ্গে আপনার আধার কার্ড লিঙ্ক করতে হবে। শুধু তাই নয় যে মোবাইল নম্বর দিয়ে আপনি টিকিট বুকিং করবেন, সেই মোবাইল নম্বরের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক থাকতে হবে। টিকিট বুকিং করার আগে আপনার আধার কার্ডের সাথে আই আর সি টি সি একাউন্টের লিংক করা রয়েছে কিনা সেটি যাচাই করা হবে। রিজার্ভেশন খোলার পরে শুধুমাত্র আধার যাচাইকৃত যাত্রীরাই ১৫ মিনিটের মধ্যে টিকিট বুকিং করতে পারবেন। আপনার আধার কার্ডের সাথে যদি আপনার মোবাইল নম্বরের লিংক করা না থাকে এবং আধার কার্ডের সাথে যদি আইআরসিটিসির একাউন্টের সঙ্গে অ্যাটাচ করা না থাকে, তাহলে কিন্তু আপনি টিকিট বুকিং করতে পারবেন না।
২) টিকিট ক্যানসেল নিয়ম:- টিকিট ক্যানসেল করার নিয়ম আগের থেকে অনেকটাই সহজ করা হয়েছে। আপনি যদি আপনার যাত্রার শুরুর ৩০ মিনিট আগে আপনার টিকিটটা ক্যানসেল করেন তাহলে আপনার বুকিং করা টাকা আপনি ফেরত পাবেন।
আরোও পড়ুন:- রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, কীভাবে করবেন আবেদন? জানুন বিস্তারিত
৩) কনফার্ম সিট যাচাই:- রেলওয়ে তরফে জানানো হয়েছে, আপনি যদি রিয়েল টাইম বুকিং করার সময় কনফার্ম সিট রয়েছে কিনা সেটা যাচাই করতে পারবেন। অর্থাৎ এটি যাচাই করে আপনি ট্রেনের টিকিট বুক করতে পারবেন।
৪) KYC পদ্ধতির পরিবর্তন:- আপনি ট্রেনের টিকিট বুকিং করার সময় যে মোবাইল নম্বর দিয়ে বুকিং করবেন, আপনি যখন ট্রেন সফর করবেন তখন সেই মোবাইলটি আপনার সঙ্গে থাকতে হবে। ট্রেন বুকিং এর কোনো রকম সমস্যা দেখা দিলে আপনার কাছে থাকা মোবাইলটি সমস্যার সমাধানে কাজে লাগবে।
৫) ই টিকিট দেখানোর সুযোগ:- ভারতীয় রেলওয়ে নিয়ম করা হয়েছে এখন থেকে আপনাকে সঙ্গে করে কোন ফিজিক্যাল টিকিট বহন করতে হবে না। আপনি যে নম্বর দিয়ে টিকিট বুকিং করেছিলেন সেই মোবাইল নম্বরে থাকা রেলওয়ে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আপনার টিকিট শো করতে পারবেন।
৬) অপেক্ষাকৃত তালিকার সীমা বৃদ্ধি:- রেল মন্ত্রণালয় এসি কোচের জন্য অপেক্ষাকৃত তালিকার সীমা আগের তুলনায় ২৫% থেকে বাড়িয়ে ৬০% করা হয়েছে। এবং নন-এসি কোচের জন্য ৩০% বাড়ানো হয়েছে। এটি যাত্রীদের জন্য অনেকটা সুবিধাজনকবুহয়েছে।
৭) রিজার্ভেশন চার্ট প্রস্তুতির সময় পরিবর্তন:- এখন থেকে রিজার্ভেশন চ্যাট ট্রেন ছাড়ার আধঘন্টা আগে প্রস্তুত করা হবে।
ভারতীয় রেলওয়ে অর্থাৎ আইআরসিটিসি পক্ষ থেকে এই নতুন সাতটি নিয়ম মেনেই এখন থেকে অনলাইন টিকিট বা তৎকালীন টিকিট বুকিং করতে হবে রেলওয়ে যাত্রীদের। বিশেষ করে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে অপরাধ প্রবণতা কমানোর জন্য। এতদিন পর্যন্ত বিভিন্ন টিকিট বুকিং এজেন্টরা রিজার্ভেশন খোলার সাথে সাথেই একসঙ্গে অনেকগুলো টিকিট বুকিং করে নিতেন। শুধু তাই নয় এর জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে এক্সট্রা চার্জ নিতেন তারা। এর ফলে অন্যান্য যাত্রীদের টিকিট বুকিং করতে সমস্যা হতো। এর জন্যই এখন রেলওয়ে টিকিট বুকিং এর ক্ষেত্রে আধার কার্ড যাচাই করুন এবং ওটিপি প্রমাণিকরণ এর মতন জোরালো নিয়ম জারি করা হয়েছে যাতে এজেন্টদের রমরমা ব্যবসা রোধ করা যায়, এবং যাত্রীদের যাত্রা নিরাপত্তা সুরক্ষিত করা যায়।