কৃষকদের ফসল বাঁচানোয় সাতরঙা রামধনুর ভূমিকা, এমন বিরলতম দৃশ্য কোথায়। 

মানুষের অত্যাবশ্যকীয় চাহিদার মধ্যে যেটি সবার প্রথমেই থাকে তা হল খাদ্য। খাদ্য ছাড়া মানুষের চলমান শক্তি থমকে যাবে। এখনো পর্যন্ত ভারতবর্ষের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। কৃষিকাজের মাধ্যমে উৎপাদিত ফসল খাদ্যের প্রধান চাহিদা মেটায়। কৃষকরা তাদের মেহনত পরিশ্রম এক করে দিয়ে চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদিত করে আর সেই ফসল মাধ্যমে মানুষের খাদ্য নিবারণ হয়। আগেকার যুগের মতন কৃষিকাজ ব্যবস্থা এখন আর নেই। লাঙ্গলের বদলে এসেছে ট্রাক্টর, তেমনি এসেছে উন্নত ধরনের রাসায়নিক কীটনাশক এবং বীজ সংরক্ষণের নানাবিধ পদ্ধতি। যাতে কোন সময় খাদ্যের যোগান অনিশ্চিত না হয়ে যায় তার জন্যই নিত্যনতুন কৃষি বিজ্ঞানীরা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বীজ সংরক্ষণ এবং কীটনাশকের হাত দেখে ফসলকে রক্ষা করার পদ্ধতি আবিষ্কার করে চলেছে। এর সাথে সাথে ফসলের গুনাগুন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন রকম পদ্ধতি এপ্লাই করা হচ্ছে কৃষিকাজে। কৃষকদের সবথেকে ফসল টেকানোর ভয় থাকে কৃষি ক্ষেত্রে থাকা পোকামাকড় বাকিট পতঙ্গের হাত থেকে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো রয়েছেই। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে কোন উপায়ে আটকানো সম্ভবপর নয়, কিন্তু ফসল কে কীটপতঙ্গের হাত থেকে বাঁচানোর উপায় বের করার নিত্যনতুন পদ্ধতি তৈরি হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় ফসল ফলানোর পরে কৃষকরা সেই ফসল ঘরে তোলার আগেই কীটপতঙ্গরা নষ্ট করে ফেলে। এর ফলে কৃষকদের লাভের অংশ পিঁপড়ে খাওয়ার মতন অবস্থা হয়। এইজন্য ফসলের বীজ বা ফসল কে পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নিত্যনতুন টেকনোলজি আবিষ্কার হচ্ছে যাতে কৃষিকাজে আরো উন্নয়ন ঘটানো যায়। 

সম্প্রতি জাপানের কৃষকরা কৃষিকাজে একটি নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করেছেন যার মাধ্যমে ফসল সংরক্ষণ থাকবে শুধু তাই নয় ফসলের বীজ সংরক্ষণ হবে খুব ভালো হবে। কি সেই প্রযুক্তি? এটি এমন একটি প্রযুক্তি যেটা শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব নয়, এই টেকনোলজি ব্যবহার করলে ফসলের কোনরকম গুণগতমান নষ্ট হবে না এবং সেই ফসল কোনোভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে না, বরং উপরে পাওনা হিসেবে এই পদ্ধতি প্রত্যেকটি মানুষের চোখের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছে। 

আকাশে যখন রামধনু দেখা যায় তখন বাচ্চা থেকে বয়স্ক প্রত্যেকের সেই সাত রং আর রামধনু দেখতে পছন্দ করে। এটি এত সুন্দর একটি দৃষ্টিনন্দন ব্যাপার সৃষ্টি করে যা চোখের সাথে সাথে মনকেও আনন্দ দেয়। 

আরোও পড়ুন:- রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, কীভাবে করবেন আবেদন? জানুন বিস্তারিত 

ঠিক রামধনুর মতন সাত রঙে ফসলকে আচ্ছাদিত করার এমন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেছে জাপানের কৃষকরা। জাপানের কৃষকরা রামধনু রং এর একটি জাল ব্যবহার করা শুরু করেছেন যেটি ফসলকে আচ্ছাদিত করছে এর সাথে সাথে পোকামাক করে হাত থেকে ফসল সুরক্ষিত থাকছে এবং এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে কোনরকম ক্ষতিকর হবে না কারণ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায় তৈরি জাল ফসলকে কোন রকম ক্ষতি করবে না। এই জাল ব্যবহার করে জাপানের কৃষকরা অনেকটাই সুরাহা পেয়েছেন। 

কিভাবে কাজ করবে এই রামধনু জাল:- কৃষকরা যখন ফসল কে এই রামধনু কালারের জাল দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে তখন সূর্যের রশ্মি পড়ে রামধনু কালারের জালে বিভিন্ন রকমের রং সৃষ্টি করছে। রুদ্রের আলোয় রামধনু কালারের ওপর বিভিন্ন রঙ যেন খেলা করে বেড়াচ্ছে। এর ফলে কীটপতঙ্গরা বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন এই রঙের প্রভাবে। তার ফলে ফসলের ধারে কাছে তাদেরকে আসতে দেখা যাচ্ছে না। 

এটি জাপানের কৃষকদের টেকসই পদ্ধতির অবলম্বন করে করা হয়েছে, যার মাধ্যমে কোনরকম রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে ফসলকে রক্ষা করার একটা পদ্ধতি। এর ফলে ফসল কোন রকম ভাবে পদত্য দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না এবং তার মাধ্যমে মানুষের শরীর ও স্বাস্থ্যের দিকটি বজায় থাকছে। এর মাধ্যমে কোনরকম খাটনি ছাড়াই পোকামাকড়কের হাত থেকে ফসল কে রক্ষা করা যাচ্ছে। এবং এই সুন্দর টেকনোলজিটি কি কাজে লাগানোর জন্য কৃষি ক্ষেত্র কে দূর থেকে দেখতে এক অভূতপূর্ব সুন্দর লাগছে যেটি খুবই দৃষ্টি নান্দনিক ব্যাপার। 

জাপানের মতো এমন টেকনোলজি ব্যবহার করে রামধনু জাল দিয়ে ফসল সংরক্ষণ করার পদ্ধতি করা হবে কিনা এই ব্যাপারে ভারতবর্ষে কৃষকরাও চিন্তাভাবনা করছেন। কারণ পোকামাকড়ের দরুন প্রত্যেক বছর প্রায় অনেক ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এই রামধনুর জাল ব্যবহার করলে কৃষকদের ফসল নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচবে এবং কৃষকদের লাভের পরিমাণটুকু তারা চাষ করে নিজেদের ঘরেই আনতে পারবেন। এবং সাধারণ মানুষ এই কৃষিজাত ফসল খেয়ে শরীরে কোনরকম কুপ্রভাব পড়বে না।

Join Group Join Group