ব্যবসা শুরু করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। এক কথায় বলতে ব্যবসা সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং বিশেষ ছাড় পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে অনুমতি পত্র হল পঞ্চায়েত ট্রেড লাইসেন্স। পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসা শুরু করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একটি অঞ্চলের মধ্যে ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য সরকার প্রণোদিত অনুমতি পত্রই হলো ট্রেড লাইসেন্স। কোন ব্যবসা শুরু করতে হলে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আপনার ব্যবসাটি অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এতদিন পর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিস থেকে ব্যবসা শুরু করার আইনিপত্র অর্থাৎ পঞ্চায়েত ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যেত। বর্তমানে আপনি ঘরে বসেই মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে অনলাইন মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। আজকে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাবো আপনাদেরকে।
ট্রেড লাইসেন্স এর লক্ষ্য :-
১) ব্যবসার সঠিক নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করা এবং পরিচালনা
২) সরকারি নিয়ম-নীতি মেনে ব্যবসা করা
৩) ব্যবসার উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন রকম সরকারি সুবিধা প্রদান করা।
৪) ব্যবসার স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা প্রদান করা।
ট্রেড লাইসেন্স এর সুবিধা গুলো কি কি :-
১) ট্রেড লাইসেন্স থাকলে এই নথি দেখিয়ে আপনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন আপনার ব্যবসার নাম করে।
২) ট্রেড লাইসেন্স নথি দেখিয়ে আপনি ব্যাংক থেকে ব্যবসা সংক্রান্ত লোন নিতে পারবেন।
৩) ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মেনে চলার জন্য ব্যবসার নিরাপত্তা থাকবে এছাড়া সরকার জন্য সুবিধা পাবেন।
৪) ব্যবসার শুরু করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স হচ্ছে একটি আপনার ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য নথি।
আরোও পড়ুন:- আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিল করার শেষ তারিখ বর্ধিত করা হলো, ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
ট্রেড লাইসেন্স আবেদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নথি :-
১) ট্রেড লাইসেন্স আবেদনের জন্য প্রথমে আপনার পরিচয় প্রমাণপত্র হিসেবে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, মোবাইল নাম্বার, পাসপোর্ট (যদি থাকে) এই নথি গুলি থাকতে হবে।
২) যে জায়গায় ব্যবসা করবে সেই জায়গার জমি খতিয়ান কপি, কোন ভাড়া করা দোকান হলে তার চুক্তিপত্রের কপি প্রদর্শন করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স ফি :-
ব্যবসার ধরন এবং প্রকার অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স ফি বিভিন্ন ধরনের হয়।
- Not paying professional Tax – 150/-
- Telephone booth, xerox centre, cyber cafe – 450/-
- Not paying professional Tax expect special trades -750/-
- Capital investment exceeding -1500/-
একবার আবেদন করলে তার মেয়াদ ৩ বছরের জন্য কার্যকরী হয়ে থাকে। অর্থাৎ তিন বছর পরে আপনাকে পুনরায় আবেদন করতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া :-
১) সবার প্রথমে https:// prdeodb.en.gov.in এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
২) এরপর হোম পেজে থাকা New Trade registration অপশনে ক্লিক করতে হবে।
৩) এরপর Trade and ONC New অপশন সিলেক্ট করতে হবে।
৪) এরপর আপনার নাম, গ্রাম, ব্লক, পঞ্চায়েত উল্লেখ করতে হবে। ব্যবসার নাম, ধরন, ব্যবসার ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
৫) এরপর আবেদনকারীর নাম, বাবার নাম, মোবাইল নাম্বার, ক্যাটাগরি এগুলো উল্লেখ করতে হবে।
৬) পূর্ববর্তী বছর থেকে ব্যবসা থেকে লাভের পরিমাণ, ফিস ক্যাটাগরি, কর্মী সংখ্যা উল্লেখ করতে হবে।
৭) এরপরে আইডি প্রুভ এবং জমি সংক্রান্ত নথি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। ক্যাপচা কোড পূরণ করে I agree লিখে সাবমিট অপশনে ক্লিক করতে হবে। অবশেষে আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে আপনি একটি একনলেজমেন্ট নাম্বার পাবেন। এরপরে ট্রেড লাইসেন্স ডকুমেন্ট ডাউনলোড করতে পারবেন।
রেজিস্ট্রেশন এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় নেয় ৫ থেকে ৭ দিন। এই সময়ের পরেই আপনি ট্রেড লাইসেন্স ডাউনলোড করে প্রিন্ট কপি করিয়ে নিতে পারেন।
তাহলে এবার থেকে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বার করার প্রয়োজন আর পড়বে না। এর ফলে অনেক সময় সেফ হবে তার সাথে কাজটা অনেক দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হবে। আপনি যদি নতুন ব্যবসা শুরু করে থাকেন এখন অবধি যদি ট্রেড লাইসেন্স না করে থাকেন, তাহলে খুব দ্রুত এটি করিয়ে নিন।