রাজ্য সরকারের “কৃষকবন্ধু প্রকল্পের” টাকা ঢুকলো রাজ্যের লক্ষ লক্ষ কৃষকদের একাউন্টে । মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সাধের জনমুখী প্রকল্প গুলির মধ্যে অন্যতম এই “কৃষক বন্ধু”। রাজ্যের কৃষকদের স্বার্থে ২০১৯ সালে এই প্রকল্প শুরু করে রাজ্য সরকার। এবছর এই প্রকল্পের অধীনে খরিফ মরশুমের খিস্তির টাকা পেলেন রাজ্যের কৃষকরা। মুখ্যমন্ত্রী নিজের সোস্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়েছেন, এই মরশুমে মোট ২৯৩০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে এই প্রকল্পের জন্য। গত ২৯ শে জুলাই থেকেই এই প্রকল্পের টাকা ঢুকতে শুরু করে। ধাপে ধাপে সব জেলার চাষীভাইদের একাউন্টে টাকা ঢুকছে। এখনও যারা টাকা পায়নি, তাদের টাকাও কয়েক দিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে ব্যাংক একাউন্টে। এই প্রকল্পে একাধিক সুবিধা পান রাজ্যের কৃষকরা।
এই প্রকল্পের সুবিধা গুলি এক নজরে –
১) এই প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা বছরে দুইবার টাকা পান। রবি ও খারিফ মরশুমে।
২) যে সমস্ত কৃষকদের ১ একর অর্থাৎ ২.৫ বিঘা চাষ জমি আছে। তারা বছরে ৫০০০ টাকা করে দুই কিস্তিতে ১০০০০ টাকা পান।
৩) যে সমস্ত কৃষকদের নূন্যতম ১ কাটা চাষ জমি আছে। তারা বছরে ২০০০ টাকা করে দুই কিস্তিতে মোট ৪০০০ টাকা পান।
৪) যে সমস্ত কৃষকদের চাষ জমির পরিমাণ নূন্যতম ১ কাটা থেকে ২.৫ বিঘার মধ্যে, তারা বছরে ৪০০০ টাকার উপরে শতাংশের হিসাবে টাকা পান।
৫)১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে কোন কৃষক বন্ধুর আকস্মিক মৃত্যু ঘটলে,এককালীন ২ লাখ ডেথ কভারেজ পান।
যারা এখনও, এই প্রকল্পে আবেদন করেননি,তারা কিভাবে আবেদন করবেন? আবেদন করার নিয়মগুলি নিচে দেওয়া হল-
১) রাজ্য সরকারের ” দুয়ারে সরকার ” কর্মসূচি কিংবা সরাসরি ব্লকের ADO অফিসে গিয়ে এই প্রকল্পের আবেদন করতে পারবেন।
২) নিজের নামে ১ কাটা চাষ জমি থাকলেই, আপনি আবেদনের যোগ্য।
৩) নিজের নামে চাষের জমি না থাকলেও, উত্তরাধিকার সূত্রে স্বর্গীয় বাবার ওয়েরিস পত্র বের করেও এই আবেদন করা যায়।
৪) আবেদন করার জন্য – নিজের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, জমির পরচা, ব্যাংক একাউন্ট, মোবাইল নং ও নিজের পাসপোর্ট সাইজ ছবি সহ “কৃষক বন্ধুর” ফর্ম জমা করলেই হবে।
৫) আবেদন গৃহীত হলেই, নিজের মোবাইল থেকে অ্যাপের মাধ্যমে নিজেই দেখতে পাবেন।
আরোত্ত পড়ুন:- ভারত সরকার UPI নিয়মে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, না মানলে গুনতে হবে জরিমানা..!
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্প কৃষকদের জন্য একটি অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছে। এই প্রকল্পে দ্বারা রাজ্যের পিছিয়ে পড়া কৃষক বন্ধুরা উপকৃত হন। এই টাকার ব্যবহার করে, চাষী ভাইরা চাষের জন্য বীজ, সার ও যন্ত্রপাতি কিনতে পারেন। প্রথমে এই প্রকল্পের বরাদ্দ কম থাকলেও পরে বরাদ্দ বেড়েছে। এমনকি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আগে এই প্রকল্পের বেনিফিট আরও বাড়তে পারে বলেও অনেকে মনে করছে।
অন্য দিকে, অপর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলার কৃষকরা প্রতিবার বন্যা, অতিবৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই তাদের কাছে এই প্রকল্পের টাকা যথেষ্ট নয়, আরও বাড়ানো উচিত। সেই সঙ্গে, তাদের আরও বক্তব্য, রাজ্যের চাষিরা ধান, আলু, তিল, পাট ও সবজির সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না , যাতে কৃষকরা সঠিক মূল্যপান সেদিকেও সরকারকে নজর দিতে হবে। এমনকি চাষের বীজ ও সারের কালোবাজারি রুখতেও সরকারকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
রাজ্যের এই প্রকল্প, কেন্দ্র সরকারের কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পের মতোই। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের এই প্রকল্পে রাজ্যের কৃষক পরিবারের মাত্র একজন সদস্য বছরে ২০০০ টাকা করে ৩ কিস্তিতে মোট ৬০০০ টাকা পান। অর্থাৎ কেন্দ্রের প্রকল্পের চেয়ে রাজ্যের “কৃষক বন্ধু” প্রকল্পে কৃষকরা বেশি উপকৃত হচ্ছেন। বাংলার কৃষকদের মুখে হাসি ফুটাতে এই প্রকল্পের বেনিফিট আরও বাড়ুক ,এই শুভকামনা করি।