গ্যাসের দাম আরও কমলো, ৩০০ টাকা ভর্তুকি বাড়ানো হলো সময়।

কেন্দ্রীয় সরকার দেশের জনসাধারণের জন্য যে সকল প্রকল্পের সূচনা করেছেন, সেগুলির মাধ্যমে দেশের নাগরিকরা অনেক আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। নরেন্দ্র মোদী দেশের মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রকল্পের সূচনা করেছেন, যার মাধ্যমে দেশের মহিলারা বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়ার সুবিধা পাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৬ সালে প্রথম উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্প সূচনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। দেশের দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলাদের জন্য বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া সুবিধা করে দেন তিনি। এরপরে গ্যাস সিলিন্ডার পিছু ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হয়। ২০২২ সালে প্রথম ২০০ টাকা করে ভর্তুকি দেওয়া হতো উজ্জ্বলা যোজনা গ্রাহকদের। এরপরে ২০২৩ সাল থেকে আরো ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৩০০ টাকা ভর্তুকি করা হয়। 

প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বলা যোজনা শুরু করার প্রধান উদ্দেশ্য হল, যাতে দেশের সকল মানুষ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার সুযোগ পায়। কয়লা ও কাঠ জাতীয় জিনিস পুড়িয়ে রান্না করলে পরিবেশ দূষণ হয়, আর এই পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমানোর জন্য এবং গ্রামীণ জীবনের মান উন্নয়ন ঘটানো এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। 

ভারতের কোটি কোটি সাধারণ ও নিম্নবিত্ত পরিবার উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে অনেকটাই উপকৃত হয়েছেন। যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে আর তার মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অন্যতম। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে মাসিক খরচার প্রথম লিস্টেই থাকে গ্যাস সিলিন্ডার। রান্না করার প্রধান জিনিসের মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডার অন্যতম। আর এই গ্যাস সিলিন্ডারের দাম এতটাই বেশি থাকে, যার ফলে সাধারণ মানুষের মাসিক খরচার অনেকটাই গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে চলে যায়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছেন ৩০০ টাকা ভর্তুকিযুক্ত গ্যাস সিলিন্ডার ২০২৬ সাল পর্যন্ত দেওয়া হবে। প্রথমে বলা হয়েছিল, ভর্তুকি যুক্ত রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের সুবিধা ২০২৪ সাল পর্যন্তই পাবেন কিন্তু পরে আরো সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার ঘোষণা করেছেন ২০২৬ সাল পর্যন্ত এই সুবিধা পেয়ে যাবেন। এই ঘোষণার পরেই সাধারণ নাগরিকরা অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন। 

উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় থাকা গ্রাহকরা গ্যাস বুকিং এর সময় ৮২৯ টাকা দিয়েই বুক করে থাকেন। বুকিং এর পর সরকার ৩০০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে থাকেন। সেই টাকা গ্রাহকের একাউন্টে জমা হয় প্রতিমাসে। অর্থাৎ প্রত্যেক সিলিন্ডার পিছু গ্রাহকদের ব্যাংক একাউন্টে ৫২৯ টাকা করে জমা হয়ে যায়।

আরোও খবর পড়ুন:- জমি ক্রয় বিক্রয় নিয়মে আমূল পরিবর্তন, জমি রেজিস্ট্রেশনে ২০২৫-এর শেষেই আসছে নতুন নিয়ম?

যেহেতু এখনো ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন তাই যে সমস্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলা নাগরিকরা এখনো এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন, তাঁরা অবশ্যই উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পে আবেদন করুন। এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে কিভাবে এই প্রকল্পে যুক্ত হবেন, কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন সেই সমস্ত তথ্য আলোচনা করা হলো। 

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:- 

১) এই সুবিধা পাবেন নিম্নবিত্ত পরিবারের মহিলারা। একমাত্র পরিবারের মহিলাদের জন্যই এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়। 

২) আবেদনকারীর বাড়ির কোন ব্যক্তি সরকারি কাজের সাথে যুক্ত থাকলে এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। 

৩) গ্রাহকের নিজস্ব একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। 

৪) ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ডের লিংক করাবো থাকতে হবে। 

৫) আবেদনকারী নিজস্ব মোবাইল নাম্বার থাকতে হবে এবং মোবাইল নাম্বারের সাথে ব্যাংক একাউন্টের কানেকশন থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:- 

  • আধার কার্ড 
  • আবেদনকারীর ব্যাংকেও পাসবুক
  • বাসস্থান প্রমাণপত্র 
  • পাসপোর্ট সাইজ ফটো 
  • কাস্ট সার্টিফিকেট 
  • বিপিএল রেশন কার্ড

আবেদন পদ্ধতি:- 

১) যে সমস্ত আবেদনকারীরা আবেদন করতে ইচ্ছুক তাঁরা তাদের নিকটস্থ এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করুন অথবা www.pmuy.gov.in থেকে ডাউনলোড করুন। 

২) এরপর ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করুন, সাথে যে সমস্ত প্রয়োজনে ডকুমেন্ট চাওয়া হয়েছে, সেই ডকুমেন্ট সহযোগে এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে জমা দিন। 

৩) আবেদন জমা দেওয়ার পরে এটি প্রক্রিয়াকরণ করা হবে। নথিপত্র যাচাই এবং যোগ্যতা বিচার করার পর আপনি যদি এই প্রকল্পের জন্য যোগ্য হন, তাহলে আপনি  উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। 

কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা একটি জনপ্রিয় প্রকল্প হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে কারণ এই প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমানে ১০ কোটির বেশি গ্রাহক উপকৃত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা গ্রামীণ জীবনের মান উন্নয়ন ঘটানো এবং পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা ও  সর্বোপরি গ্রামীণ মহিলাদের ব্যাংক একাউন্টে ভর্তুকি তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দিচ্ছে। এইজন্যই প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার গুরুত্ব দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Leave a Comment

Join Group Join Group