শুধুমাত্র ৫ আর ১৮ শতাংশ হারে জিএসটি, মদ, সিগারেট জাতীয় দ্রব্যের ওপর বাড়ানো হলো কর।

নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর জিএসটি চাপানোর ফলে অনেক দ্রব্যের দ্রব্যমূল্যের হার অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে অনেকটা সমস্যাদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সম্প্রতি, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের সঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জিএসটি নিয়ে একটি মত প্রকাশিত হয়, তাতে ঠিক করা হয় এবার থেকে চারটি হারের পরিবর্তে মাত্র দুটি হারে জিএসটি ধার্য করা হবে। এতে অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামের পরিমাণ হ্রাস পাবে। একই সাথে মাদক জাতীয় দ্রব্য এবং বিলাসবহুল গাড়িতে করের পরিমাণ বাড়ানো হলো ৪০ শতাংশ। 

প্রসঙ্গত, ১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন নরেন্দ্র মোদি লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেওয়ার সময় জিএসটি নিয়ে কিছু বার্তা দেন দেশবাসীর জন্য। ১৫ই আগস্ট-এর দিনেই নরেন্দ্র মোদী জিএসটি সংস্কার নিয়ে কিছু কথা উল্লেখ করেন, দীপাবলির আগে নতুন জিএসটি চালু হয়ে যাওয়ার কথাও তিনি জানান। 

এরপরেই গত বৃহস্পতিবার, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে জিএসটি সংস্কার নিয়ে ৬ সদস্যের মন্ত্রিসভার একটি বৈঠক হয়। এই বৈঠকেই কেন্দ্রের জিএসটি সংস্কারে এই মতামতকে স্বাগত জানান মন্ত্রী গোষ্ঠীরা।

আরোও পড়ুন:- রাজ্যে ফের হতে চলেছে এসএসসি, নেওয়া হবে ১৯৪১ জন শিক্ষক। জানুন বিস্তারিত!

বৈঠকে ছিলেন বিহার, বাংলা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, কর্নাটক এবং কেরলের প্রতিনিধি। 

 এতদিন পর্যন্ত চারটি হারে জি এস টি চালু ছিল, এর পরিবর্তে মাত্র দুটি হারে জিএসটি চালু থাকবে। অর্থাৎ ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ জিএসটি কার্যকর থাকবে, ১২ এবং ২৮ শতাংশ জিএসটি তুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে, ক্ষতিকর দ্রব্য এবং বিলাসবহুল জিনিসের জন্য আলাদা করে বেশি কর আরোপ করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সিগারেট, মদ এবং বিলাসবহুল গাড়ি, ঠান্ডা পানীয়, ফাস্ট ফুড, কফি, চিনি, এমনকি পর্নোগ্রাফিকেও সর্বোচ্চ করের তালিকায় রাখা হয়েছে। এগুলিকে ‘সিন ট্যাক্স’ বলা হচ্ছে। 

সাধারণত মানুষকে ক্ষতিজাত দ্রব্যের নেশা থেকে দূরে সরানোর জন্য এবং নিরুৎসাহ করানোর জন্যই সর্বোচ্চ কর আরোপ করা হয়েছে। 

এই জিএসটি নতুন সংস্কার এরপর যাবে জিএসটি কাউন্সিলে। অর্থাৎ আবার সেপ্টেম্বর মাসেই সম্পূর্ণরূপে জানা যাবে ঠিক কবে থেকে নতুন হারের জিএসটি চালু হতে চলেছে। আশা করা যাচ্ছে, দীপাবলি থেকেই এই নতুন জিএসটি সংস্কার চালু হতে চলেছে। 

জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, জিএসটি হার দুটি করার ফলে রাজস্বের অনেকটাই ক্ষতি হবে, তাই জন্য নেশাজাত দ্রব্যের ওপর ৪০ শতাংশেরও বেশি কর আরোপ করার কথা তিনি জানান। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জিএসটি কাউন্সিলে যাওয়ার পরেই জিএসটি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়া যাবে সেপ্টেম্বর মাসে। 

অন্যদিকে, স্বাস্থ্য বীমা এবং জীবন বীমার উপর সম্পূর্ণ জিএসটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এক্ষেত্রে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মতে, স্বাস্থ্য বীমা এবং জীবনবিমার উপর থেকে জিএসটি তুলে নেওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রে বীমা সংস্থাগুলি গ্রাহকদের ওপর বেশি পরিমাণে প্রিমিয়ামের বোঝা চাপাতে পারে, এজন্য সেদিকেও লক্ষ রাখার কথা তিনি জানিয়েছেন। 

জিএসটি তে চারটি হারের পরিবর্তে দুটি হার হওয়ার ফলে অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সস্তা হয়ে যাবে, যার ফলে মধ্যবিত্ত মানুষের অনেকটাই সুবিধা হবে। অ্যালকোহল মুক্ত পানীয়, দুগ্ধ যত পদার্থ, ইলেকট্রনিক জিনিস যেমন এয়ারকন্ডিশন, রেফ্রিজারেটরের দাম অনেকটা কমবে কারণ এতদিন পর্যন্ত ২৮ পার্সেন্ট জিএসটি ধার্য করা হতো, এখন সেটি সংশোধন করে ১৮% হয়ে যাবে তারপর দাম অনেক সস্তা হয়ে যাবে। ১,২০০ সিসির কম ইঞ্জিন ধারণক্ষমতার চার চাকার গাড়ি ও ৫০০ সিসি পর্যন্ত দুই চাকার গাড়ির দামও কমতে পারে।

সবমিলিয়ে বলা যায়, কেন্দ্রের নতুন জিএসটি সংস্কার এক নতুন দিক উন্মোচন করবে, যার ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক সস্তা হবে। মধ্যবিত্ত মানুষের পকেটের চাপ অনেকটাই কমবে। যদিও জিএসটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে শেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেপ্টেম্বর মাসে। তবে আশা করা যাচ্ছে, দীপাবলির সময় থেকেই নতুন হারে জিএসটি চালু হয়ে যাবে।

Leave a Comment

Join Group Join Group