আধার কার্ড একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, যেটি স্কুল কলেজ এডমিশনের ক্ষেত্রে, চাকরির ক্ষেত্রে, ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে, পাসপোর্ট তৈরিতে, আয়কর প্রদান এবং স্কলারশিপ ও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে আবেদনের জন্য এছাড়াও বিভিন্ন রকম প্রয়োজনে আধার কার্ড গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসেবে বিবেচিত হয়। আধার কার্ড শিশু অবস্থাতেই অর্থাৎ শিশুর জন্মের পরেই তৈরি করা যায়, তবে এই আধার কার্ডে শিশুর বায়োমেট্রিক নেওয়া হয় না, শুধুমাত্র শিশুর অভিভাবকের নাম ঠিকানা এবং তাদের আধার কার্ডের সাথে শিশুর আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণ করানো হয়। জন্মের পরে আধার কার্ড করানোর জন্য শুধুমাত্র শিশুর বার্থ সার্টিফিকেট নথির প্রয়োজন হয়। এই আধার কার্ড ৫ বছর বয়সে এবং ১৫ বছর বয়সে আরও দুবার আপডেট করতে হয়। এটি যদি না করা হয় তাহলে UIDAI পক্ষ থেকে আধার কার্ড বাতিল করে দেওয়া হয়। ৫ বছর এবং ১৫ বছর বয়সে শিশুদের চোখের মনির ছবি, হাতের আঙ্গুলের বায়োমেট্রিক করানো হয়ে থাকে। সেই সময়েই আধার কার্ডে শিশুর নাম, জন্ম তারিখ, বাসস্থান এগুলো উল্লেখ করা থাকে। UADAI পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তির ১০ বছর অন্তর আধার কার্ড আপডেট করতে হবে। এটি না করানো হলে আধার কার্ড বাতিল বলে গণ্য করা হবে। এর কারণ, একজন ব্যক্তির কোন কারনে ঠিকানা বদল করলে, কিংবা মোবাইল নম্বর বদল করলে সেটি যদি আধার কার্ডে আপডেট না করা থাকে, তাহলে অনেক দরকারি কাজকর্মে এই আধার কার্ড ঠিক মতন তথ্য দেবে না। এক্ষেত্রে আপনার সেই দরকারি কাজটি হওয়া থেকে বিরত থাকবে। এছাড়াও অনেক ব্যক্তির আধার কার্ডে নামের বানান, পদবী পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়, এড্রেস পরিবর্তন করে থাকেন অনেকেই। এই সমস্ত ব্যাপারে অনেকেই ভেবে থাকে এই নতুন আপডেট তথ্যগুলো কিভাবে আধার কার্ডের সংযুক্ত করা হবে? এ বিষয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন, আজকে এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনাদের এই চিন্তার অনেকটাই সমাধান করতে পারব। যদিও এতদিন পর্যন্ত নিকটবর্তী আধার কেন্দ্রে গিয়ে আধার কার্ডের ভুল নাম বা পদবী পরিবর্তন করতে হতো, সেক্ষেত্রে সময় করে আধার কেন্দ্রে যাওয়া এবং লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ করানো অনেক জটিল ব্যাপার ছিল। এইজন্য UADAI পক্ষ থেকে ২০২৫ সালে এই পদ্ধতি কে ডিজিটাইলেশন করে দিয়েছেন। এর ফলে আপনি বাড়িতে বসেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করে কয়েক মিনিটের মধ্যে আধার কার্ডের ভুল তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন।
আগে জেনে নেওয়া যাক আধার কার্ডে ভুল তথ্য পরিবর্তন করে সঠিক তথ্য আপডেট করার সুবিধা কি :
১) সরকারি এবং বেসরকারি খাতের পরিষেবাগুলিতে সুষ্ঠুভাবে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা।
২) আধার-সংযুক্ত লেনদেনের জন্য প্রমাণীকরণ করতে সহায়তা হয়।
৩) ভুল তথ্যের কারণে বিভিন্ন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া।
অনলাইন পদ্ধতিতে আপডেট করার পদ্ধতি:-
১) আপনাকে সর্বপ্রথম UIDAI ওয়েবসাইট https://uidai.gov.in/en/ ভিজিট করতে হবে।
২) এরপর My Aadhaar ড্রপ ডাউন মেনুতে ‘ডকুমেন্ট আপডেট’ ট্যাবে ক্লিক করতে হবে।
৩) এরপর https://myaadhaar.uidai.gov.in/du/en_IN- এই লিংকে প্রবেশ করে ‘Click to Submit’ বিকল্পটি নির্বাচন করুন।
৪) এরপর আপনাকে আধার নম্বর ইনপুট করতে হবে। এ ছাড়া ক্যাপচা টাইপ করতে হবে। এরপর লগ ইন ওটিপিতে করতে হবে।
৫) আপনার আদরের সঙ্গে সংযুক্ত রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরে প্রাপ্ত ওটিপি নির্দিষ্ট জায়গায় ইনপুট করলেই আপনার সিস্টেম লগইন করতে পারবেন।
৬) এরপর ডকুমেন্ট আপডেট অপশনে ক্লিক করুন।
৭) আপনার নাম, লিঙ্গ, জন্ম তারিখ এবং ঠিকানা উল্লেখ করে বানানগুলিও পরীক্ষা করে দেখুন। এই বিবরণগুলি যাচাই হয়ে গেলে, Next-এ ক্লিক করুন।
৮) এখন আপনাকে উল্লেখিত নথিগুলো স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। নথিগুলি 2 MB এর কম হতে হবে এবং JPEG, PNG এবং PDF ফাইল ফর্ম্যাটে আপলোড করতে হবে। যে সমস্ত ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে সেগুলো হলো বিবাহের শংসাপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, প্যান কার্ড ইত্যাদি। ঠিকানার প্রমাণের জন্য, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস সংযোগ বিল, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ভোটার পরিচয়পত্র।
এই নথিগুলি জমা দেওয়ার পরে, পরিষেবা থেকে পাওয়া কনজিউমার নম্বরটি লিখে রাখুন, কারণ এটি আপনার আধার আবেদনের স্ট্যাটাস ট্র্যাক করতে সহায়তা করবে।
আপনি আপনার আপডেট হওয়া আধার কার্ড সরকারের কাছ থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আপনার বাড়ির এড্রেসে পেয়ে যাবেন।
পোস্ট অফিস থেকে যে ল্যামিনেটেড কপি আপনি পাবেন সেটি ছাড়াও, অত্যন্ত প্রয়োজনে আপনি ডিজিটাল আকারে আবেদন করা নথিটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করিয়ে রাখতে পারেন।
আপনি যদি আধার কার্ডে উল্লেখিত নামের বানান, বিয়ের পরের পদবী পরিবর্তন এবং ঠিকানার পরিবর্তন করতে চাইছেন তাহলে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করে খুব সহজে বাড়িতে বসে কয়েক মিনিটের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন।