২৫ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে আয় করুন ৫০ হাজার টাকা, এই ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন?

বর্তমান সময়ে যে হারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জীবনযাত্রার মান বদলেছে সেই হারে আয় বৃদ্ধি না করলে বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলো অসম্ভব। একজন ব্যক্তির একটি মাত্র সোর্স থেকে আয়ের উৎস না থেকে যদি একের অধিক আয়ের উৎসর সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে মন্দ হয়না। এছাড়া বর্তমান সময়ে চাকরির যে অবস্থা তাতে ঘরে ঘরে বেকার যুবক যুবতী সংখ্যা বাড়ছে। চাকরি না পেয়ে অনেকেই মনোবল হারিয়ে ফেলেছেন এবং মানসিকভাবে ডিপ্রেসড হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই চাকরির বদলে ব্যবসা শুরু করেন কিন্তু ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজন পড়ে মূলধনের। এই মূলধন জোগান দিতে গেলে দরকার হয় মোটা টাকার। অনেক পরিবারের আর্থিক অবস্থা অনুন্নত হওয়ার জন্য বেকার যুবক যুবতীদের ব্যবসা শুরু করার স্বপ্ন অধরা থেকে যায়। আজকের এই প্রতিবেদনে এমন একটি ব্যবসার সন্ধান দেব, যেই ব্যবসায় অল্প মূলধন বিনিয়োগ করে আপনি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন খুব সহজেই। অল্প মূলধন বিনিয়োগ করে আপনি অধিক অংকের টাকা লাভ করার সুযোগ পাবেন। আপনি কি এমনই একটি ব্যবসার খোঁজ করছিলেন তাহলে ঝটপট পড়ে ফেলুন এই প্রতিবেদন। 

বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। এই ডিজিটাল যুগকে কাজে লাগিয়ে বর্তমানে অনেক রকম নতুন ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটেছে। এমনই একটি ব্যবসা সম্পর্কে আজকে আপনাদেরকে জানাবো। আপনার হাতেও যদি খুব কম মূলধন থাকে অথচ মনে স্বপ্ন থাকে একটা ব্যবসা শুরু করার তাহলেও আপনি আপনার স্বপ্নকে পূরণ করার পথ খুঁজে পাবেন এই ব্যবসার হাত ধরে। 

“বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ” একটা কথা আছে। সারা বছর ধরে বিভিন্ন রকম উৎসব অনুষ্ঠান হয়ে থাকে আর এইসব উৎসব অনুষ্ঠানে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং নিজের মানুষকে উপহার দিতেই হয়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উপহারের সামগ্রীর আইটেমের অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। এছাড়া শুধু উপহার সামগ্রীর আইটেম নয়, প্যাকেজিং ব্যবস্থারও অনেক নিত্য নতুন ধরন এসেছে। একই বক্সে বিভিন্ন রকমের উপহার সামগ্রী সাজিয়ে দেওয়ার নতুন ভাবনা এসেছে, যেটা দেখতেও ভীষণ সুন্দর লাগে এবং একসঙ্গে অনেক রকম আইটেম থাকায় যাকে উপহার দেওয়া হয় সেও ভীষণ খুশি হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে অনেকেই নিজের হাতের কাজকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর সুন্দর আর্ট বা শিল্পকলা তৈরি করে সোশ্যাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। 

আরোও পড়ুন:- সোনার ধাতুতে বড় চমক! আজকের বাজারে সোনার রেট কত? 

আপনি যদি কম পুজি কাজে লাগিয়ে এবং অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল লাভ করতে চান, তাহলে বাড়িতে বসেই গিফট কিট ক্রিয়েটরের ব্যবসা শুরু করতেই পারেন। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার খুব বেশি মূলধন খাটানোর প্রয়োজন হবে না, এছাড়া এই ব্যবসাতে আপনার সময়ও খুব বেশি দিতে হবে না। ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে কোন জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই, বাড়িতে বসেই শুধুমাত্র ফোন ব্যবহার করে ব্যবসার অর্ডার নিতে পারবেন এবং অর্ডার সাপ্লাইও করতে পারবেন।

কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন :- 

আপনি সোশ্যাল মাধ্যমে এই ব্যবসা যে শুরু করছেন তার কিছু নমুনা দিয়ে রাখতে পারেন। যাতে সবাই আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে, তার জন্য কন্টাক্ট নাম্বার দিয়ে দেবেন। এরপরে আপনার কন্টাক্ট নাম্বারে সবাই ফোন করে আপনাকে বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানের জন্য যেমন জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী, অন্নপ্রাশন গিফট কিট বানানোর জন্য বলবেন। তারা যে সমস্ত গিফট কিট হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন সেগুলো আপনি বাজার থেকে কিনে এনে আপনার শিল্পকলার মাধ্যমে আপনার কৌশল প্রয়োগ করে সেগুলোকে সুন্দর করে সজ্জিত করবেন। এরপর তাদের অ্যাড্রেসে আপনি এটি সাপ্লাই করে দেবেন। এই কাজগুলি করার জন্য আপনার শুধুমাত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে গিফটের ছবি আদান-প্রদান এবং ফোনে কথা বলার টুকুই প্রয়োজন হবে। আপনার কাজ তাদের পছন্দ হলে আবার আপনাকে অর্ডার দেবে এবং তাদের মাধ্যমে অন্যরাও জানতে পারলে অন্যদের থেকেও আপনি অর্ডার পাবেন। এই ভাবেই আপনার ব্যবসার সম্পসারন করতে পারবেন, এছাড়াও আপনার বানানো জিনিসগুলি সোশ্যাল মাধ্যমে একটি পেজ করে দিলে, অন্যরা যদি সেই পেজ শেয়ার করে তাহলে আপনার কাজের ভালো দিকটি ছড়িয়ে পড়বে সমাজ মাধ্যমে। 

কাদের জন্য এই ব্যবসা শুরু করার সবথেকে ভালো হবে:- কলেজ স্টুডেন্টরাও তাদের পড়াশোনার ফাঁকে এই ব্যবসার জন্য সময় দিতে পারবেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এবং বাড়ির গৃহবধূ এবং যেকোনো সাধারণ নাগরিক ইচ্ছে থাকলে এই ব্যবসায় শুরু করতে পারেন। বেকার যুবক যুবতীরাও অল্প মূলধন প্রয়োগ করে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

মূলধন হিসেবে কি কি রাখবেন :- 

মূলধন হিসেবে আপনার প্রথমে চার থেকে পাঁচটি কাস্টম গিফট কিট তৈরি করে রাখতে পারেন। 

প্রিন্টেড প্যাকেজিং এবং গিফট আইটেম কিট বানানোর জন্য সজ্জা সামগ্রী কিনতে হবে।

প্রমোশনের জন্য ফেসবুক পেজ তৈরি করতে হবে। 

এই ব্যবসা থেকে অনেক লাভ হবে কারণ যে টাকা খরচ করে একটি গিফট আইটেম আপনি তৈরি করবেন, তার বেশি ডবল দামে আপনি বিক্রি করতে পারবেন। কারণ এই সমস্ত আইটেম কিটগুলো সচরাচর একটু বেশি মূল্যে বিক্রি করা হয়। আপনি যদি কোন একটি গিফট কিট তৈরি করতে ৫০০ টাকা খরচ করেন তাহলে ১০০০ টাকায় এটি বিক্রি করলে আপনার 500 টাকা লাভ থাকবে।

গিফট কিটে কি কি রাখবেন :- 

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে একটি গিফট গিট তৈরি করার সময় লক্ষ্য রাখবেন তার মধ্যে যেন ঘর সাজাবার কোন সৌখিন শোপিস, একটি সুন্দর লেখা কোন কার্ড, ফুল চকলেট দিয়ে একটি আর্ট, কাস্টম বক্স এছাড়া ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী কিছু জিনিস রাখতে পারেন আপনার গিফট কিট আইটেমে। 

অর্ডার কিভাবে পাবেন :- সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে অর্ডার পাওয়া খুবই সহজ। আপনি ইনস্টাগ্রাম পেজ খুলতে পারেন, সেখানে আপনার সমস্ত গিফট আইটেম কিটের কিছু নমুনা রাখতে পারেন, এছাড়া ফেসবুকে পেজ খুলতে পারেন। আপনার নিজস্ব বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীকে জানিয়ে রাখতে পারেন। তাদের মাধ্যমে কেউ আপনার কাছে অর্ডার করতে পারে। মনে রাখবেন, আপনার কাজ যদি ভালো হয় ক্লায়েন্টদের পছন্দ হয় তাহলে একটি অর্ডারের সাথে সাথে আপনার কাছে আরো পাঁচটি অর্ডার আসবে। এইভাবেই আপনার ব্যবসা বিস্তার করবে। 

কোন ব্যবসা শুরু করলে কয়েকটি কথা মাথায় রাখতে হয় তার মধ্যে একটি হলো, সব সময় মন দিয়ে ভালো কাজ করার চেষ্টা করুন এবং সময়মতো ডেলিভারি দেওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের ইচ্ছেকে ক্লায়েন্টের ওপর চাপিয়ে দেবেন না জোর করে। ক্লাইন্ট যেমন চাইছেন সেই হিসেবেই কাজ করার চেষ্টা করুন। আপনার ক্লায়েন্টের বাজেট অনুযায়ী উপহার সামগ্রী কিনে গিফট কিট তৈরি করার চেষ্টা করবেন। নিত্য নতুন সুন্দর প্যাকেজিং কৌশল এনে আপনার গিফটটিট আইটেম আরো সুন্দর করে সাজিয়ে তুলুন। 

আপনারা যদি বেশি সময় না থাকে তাহলে খুব কম সময় দিয়েও ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। কম মূলধন দিয়ে বাড়িতে বসেই কোনো রকম কর্মচারী না রেখে সৃজনশীল এবং শিল্পকলাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য গিফট কিট ক্রিয়েটরে ব্যবসা কিন্তু অন্যতম লাভজনক ব্যবসা।

আপনি যদি এমনই একটি কম মূলধন প্রয়োগ করে লাভজনক ব্যবসা করার কথা ভাবছেন তাহলে এটি হতে পারে আপনার স্বপ্ন পূরণের চাবিকাঠি।

Leave a Comment

Join Group Join Group