আপনার যদি জব কার্ড থেকে থাকে তাহলে সেই জব কার্ড একটা নির্দিষ্ট পিরিয়ড পড়ে রিনিউয়ালের জন্য আবেদন করতে হয়। এছাড়া জব কার্ড ভেরিফিকেশন কিভাবে করবেন সেই পদ্ধতি সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই সকল বিষয়ে পর্যালোচনা করার জন্য আজকের এই প্রতিবেদন। আশা করা যায়, এই প্রতিবেদনে আপনার সমস্ত রকম সমস্যার সমাধান দিতে পারবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জব কার্ড যোজনা প্রকল্প একটি দুর্দান্ত প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষদের আর্থিক অবস্থা সুরক্ষিত থাকে। বিশেষত শ্রমজীবী মানুষদের অর্থাৎ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করা শ্রমিকদের জন্যই জব কার্ড যোজনা প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
অসংগঠিত কর্মীদের স্বাস্থ্য এবং সামাজিক অবস্থান উন্নত করা, সেই সাথে অর্থনৈতিক অবস্থান সুরক্ষিত করা কেন্দ্রীয় সরকারের সূচনা করা এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
জব কার্ড যোজনা প্রকল্প থেকে আপনি কি কি সুবিধা পেতে পারেন :- জব কার্ড যোজনায় আবেদন করলে আপনি বীমা সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে আবেদনের সুযোগ পেয়ে যাবেন। এছাড়াও জব কার্ড থাকলে একজন মহিলা শ্রমিকদের জন্য ১৮ হাজার টাকা এবং পুরুষ শ্রমিকের জন্য ২১ হাজার টাকা এককালীন হিসেবে দেওয়া হয়। এই টাকা সরাসরি গ্রাহকদের DBT পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়।
আরোও পড়ুন:- ভোটার কার্ড আর দেরিতে নয়, ১৫ দিনের পরিবর্তে মাত্র ৫ দিনে পৌঁছে দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিল ডাক বিভাগ।
জব কার্ড ভেরিফিকেশন পদ্ধতি :-
জব কার্ডের আবেদন করলে জব কার্ড ভেরিফিকেশন করা হয় তারপরেই আপনি এ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পূর্ণ সরাসরি যুক্ত হতে পারবেন। ভেরিফিকেশন এর জন্য সাধারণত ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের কার্যালয় বা পঞ্চায়েত অফিসে যেতে হবে আবেদনকারীকে। এবং সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
রিনিউ করার জন্য অর্থাৎ আপনার জব কার্ড নির্দিষ্ট সময় সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর এটি কি আবার রিনিউ করতে হয়। এইজন্য আপনার যে সমস্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে তার মধ্যে হল পরিচয় পত্র, ঠিকানা প্রমাণপত্র, ফটো, ব্যাংক একাউন্ট ইত্যাদি। এই ডকুমেন্ট সহযোগে আপনাকে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের কাছে বা পঞ্চায়েত অফিসে যেতে হবে। নতুন জব কার্ড পেতে বা পুরানো জব কার্ড রিনিউ করতে হলে, ব্লক অফিস থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম সংগ্রহ করুন (যেমন ফর্ম ১ বা ফর্ম ৪) সংগ্রহ করে এটি সঠিকভাবে পূরণ করে পঞ্চায়েত অফিসেই বা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের কাছে ডকুমেন্ট সহযোগে রিনিউ ফর্ম জমা দিন। এরপরে আপনার রিনিউ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আগের মতনই জব কার্ডের মাধ্যমে যে সমস্ত সুবিধা গুলো আপনি পাচ্ছেন সেই সমস্ত সুবিধা গুলো আপনি আবার পেতে থাকবেন।
যদি আপনি অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মী হয়ে থাকেন কিন্তু এখনো জব কার্ড যোজনা প্রকল্পে আবেদন করেননি, তাহলে জেনে নিন আবেদন পদ্ধতি সহ আরো অন্যান্য তথ্য:-
জব কার্ড যোজনা প্রকল্পে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় মানদন্ড :-
১) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
২) আবেদনকারীকে অসংগঠিত কর্মক্ষেত্রের শ্রমিক হতে হবে।
৩) আবেদনকারীর ব্যাংক একাউন্ট ডিবিটি সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে।
৪) আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:-
১) রেশন কার্ড
২) আধার কার্ড
৩) জব কার্ড
৪) বাসস্থানের প্রমাণ পত্র
৫) আয়ের প্রমাণপত্র
৬) পাসপোর্ট সাইজ ছবি
৭) ব্যাংকের পাসবুক এর ছবি
৮) মোবাইল নাম্বার
আবেদন প্রক্রিয়া:- অনলাইন এবং অফলাইন দুটি পদ্ধতিতে আপনি আবেদন করতে পারবেন জব কার্ডের জন্য। অফলাইন মাধ্যমে আবেদন করতে হলে পঞ্চায়েত অফিস কিংবা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে অফিসে। এরপর পঞ্চায়েত অফিস থেকে দেওয়া জব কার্ড দুজনে প্রকল্পের আবেদনপত্র সঠিকভাবে পূরণ করে ডকুমেন্ট সহযোগে সেখানে জমা দিতে হবে। আপনার আবেদনপত্র এবং ডকুমেন্ট অফিসারের মাধ্যমে সঠিক বিবেচিত হলে আপনি জব কার্ড প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।
অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদনের জন্য রাজ্যের শ্রমদপ্তরের ওয়েবসাইট বা E-Shram পোর্টালে আবেদন করতে হবে।
আবেদনকারীকে সর্বপ্রথম রাজ্য শ্রম দপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://eshram.gov ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। এরপর হোমপেজে এসে জব কার্ড স্কিম এপ্লাই অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর নিউ রেজিস্ট্রেশন নম্বরে গিয়ে মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল আইডি ইনপুট করতে হবে। এরপর আবেদন পত্রে নিজের সমস্ত ডিটেইল ওস নির্ভুলভাবে ইনক্লুড করতে হবে। এরপর উল্লেখিত ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। এরপর সাবমিট অপশনে ক্লিক করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এরপর রশিদ কপি থাকবে সেটি প্রিন্ট আউট করে নিজের কাছে সংরক্ষণ করে রাখবেন ভবিষ্যতে রেফারেন্স এর জন্য।
আবেদন করার ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে আপনার আবেদন পত্র ও ডকুমেন্ট যাচাই করা হবে এবং তারপরে আপনার নাম জব কার্ড যোজনা প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করে দেওয়া হবে।
আপনি যদি একজন অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জব কার্ড যোজনা প্রকল্পের নিজের নাম এবং পরিবারের প্রত্যেকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আপনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ক্ষেত্রে এ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে শুরু করে এককালীন অনুদান পাওয়ার সুযোগ পাবেন। এজন্য আপনি যদি জব কার্ডের প্রকল্পে এখনো পর্যন্ত আবেদন না করে থাকেন তাহলে আবেদন করুন উপরে বর্ণিত পদ্ধতি অ্যাপ্লাই করে। আর যদি আপনি জব কার্ড হোল্ডার হয়ে থাকেন তাহলে সেটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরে রিনিউ করে নেবেন। রিনিউ না করলে আপনি জব কার্ড প্রকল্পের সুবিধা থেকে বাদ পড়বেন।