আয়কর রিটার্ন (ITR) হল এমনএকটি ফর্ম, যার মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে ভারতের আয়কর বিভাগের তরফ থেকে আপনার আয় এবং প্রযোজ্য কর সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দেয়। ভারতীয় আয়কর আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক ভারতীয় ব্যক্তিকে আয় উপার্জনে আইটি রিটার্ন দাখিল করা উচিত। ২০২৫-২০২৬ অর্থবর্ষে আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ বাড়ানো হয়েছে। ৩১ জুলাইয়ের পরিবর্তে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে আইটিআর জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩১শে জুলাই ২০২৫, কিন্তু আয়কর বিভাগ মে মাসে তা ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছিল। ৩১ শে জুলাই এর মধ্যে আইটিআর ফাইল দাখিলের জন্য খুবই কম সময় হওয়ায় একাধিক করদাতা ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের পক্ষে বিভিন্ন রকম অসুবিধা সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। তাই জন্য ৩১ শে জুলাই এর পরিবর্তে কোন সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বর্ধিত করা হয়েছিল। তবুও এখনও পর্যন্ত ৫.৩ কোটি রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে। এদিকে ১৫ সেপ্টেম্বর দিনটি এসে যাওয়ায় সাথে সাথে করদাতা এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা সরকারকে নির্ধারিত তারিখ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করছেন। ব্যক্তিগত করদাতা এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা বলছেন যে পোর্টালের ত্রুটি, আইটিআর প্রক্রিয়াকরণে বিলম্ব এবং আইটিআর রিফান্ড স্ট্যাটাসের সমস্যার কারণে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। এই কারণে, তারা সরকারের কাছে আরও কিছু সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ইতিমধ্যে, যাতে কোনও ভুল ছাড়াই ফাইলিং সম্পন্ন করা যায়। এখন অর্থ দপ্তর এই সময় আরও বৃদ্ধি করবে কিনা সেই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি এখনও পর্যন্ত। আপাতত ১৫ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ আগের বর্ধিত করা নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে আইটিআর ফাইল দাখিল করার কথা রয়েছে।
মেয়াদ বৃদ্ধি করার কারণ :-
১) অনেক ব্যক্তিগত করদাতা,পেশাদার করদাতা, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা আয়কর ই-ফাইলিং পোর্টালে রিটার্ন আপলোড করার সময় পোর্টালের ত্রুটি, লগ ইন পিরিয়ড খুব ধীরগতিতে হওয়ার জন্য অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
২) বার্ষিক তথ্য বিবরণী (AIS) এবং ফর্ম 26AS-এর মধ্যে তথ্য অমিলের কারণে কর ক্রেডিট সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। এরফলেও তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
৩) করদাতারা তাদের আইটিআর ফর্ম আপডেট করারও অনেক সময় পরে ফাইল প্রকাশ করা হচ্ছিল। যার ফলে কার্যকর ফাইলিং সময়সীমা কম ছিল।
আরোও পড়ুন:- স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ২০২৫, রাজ্য সরকারের তরফে নতুন কি আপডেট দেওয়া হয়েছে এই কার্ড নিয়ে!
সর্বপ্রথম চণ্ডীগড় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ট্যাক্সেশন অ্যাসোসিয়েশন (CCATAX) এবং আরও অন্যান্য সংস্থা CBDT-কে এই অসুবিধাগুলো বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে আয়কর দপ্তরের তরফে এই সমস্ত সমস্যা ও প্রতিকূলতাগুলোর পর্যবেক্ষণ করে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এরপরেই আয়কর ফাইল দাখিলের সময়সীমা ছয় সপ্তাহ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে যত নির্ধারিত শেষ সময় এগিয়ে আসছে, তার মধ্যেও বিভিন্ন কারণবশত এখনো পর্যন্ত অনেক করদাতা আয়কর ফাইল দাখিল করে উঠতে পারেননি। তারা আরো কিছুটা সময় বর্ধিত করার জন্য আয়কর দপ্তরের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে আরও সময় বর্ধিত করা হবে কিনা এই ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট বার্তা এসে পৌঁছায়নি আয়কর দপ্তরে তরফ থেকে। সেদিক থেকে করদাতাদের ১৫ই সেপ্টেম্বর কি শেষ সময় ধরে আইটিআর ফাইল দাখিল করতে হবে।
তাই আপনি যদি ১৫ই সেপ্টেম্বরের এই বর্ধিত সময়সীমার মধ্যেও আইটিআর ফাইল দাখিল করতে না পারেন অর্থাৎ এই সময়সীমা মিস করেন তাহলে ধারা ২৩৪F এর আওতায় বিলম্ব ফি চার্জ নেওয়া হবে। এছাড়া ২৩৪এ, ২৩৪বি, ২৩৪ সি আওতায় অধিক সুদ দিতে হবে।
এইজন্য সময়মতো আইটিআর দাখিল করা উচিত, এটা যদি না করেন নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে, তাহলে আপনাকে জরিমানা, অপরিশোধিত করের উপর প্রযোজ্য সুদ এবং এমনকি আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে। এই সমস্যাগুলি থেকে সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে আপনার আয়কর রিটার্ন দাখিল করা অপরিহার্য।