CSC ট্রেনিং ও সার্টিফিকেট কোর্স, সাথে ৩০,০০০ টাকা পাওয়ার সুযোগ; কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন স্কিম?

কেন্দ্র সরকার দেশের যুবসমাজকে উৎসাহিত করার জন্য এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। দিনে দিনে যেভাবে বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং শিক্ষিত যুবসমাজ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে, তাই তাদের মনোবল বাড়াবার জন্য এবং সঠিকভাবে জীবনকে চালনা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন রকম প্রকল্পের সূচনা করেছেন যেগুলোর মাধ্যমে যুব সমাজের আর্থিক সাহায্য করা হয়। তবে এইবার কেন্দ্রীয় সরকার শুধুমাত্র আর্থিক সাহায্যই নয়, শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের জন্য একটি সার্টিফিকেট ট্রেনিং কোর্সের সূচনা করতে চলেছেন, যেখানে ট্রেনিং শেষে বেতন পাওয়ারও সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। আপনিও যদি এখনো পর্যন্ত কোনো চাকরির সাথে যুক্ত না হয়ে থাকেন, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের এই কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কিভাবে এই কোর্সে অংশগ্রহণ করবেন, কি যোগ্যতা প্রয়োজন, এই প্রকল্প থেকে কি কি সুবিধা পাবেন – এই সমস্ত রকম তথ্য জানাবো আজকের এই প্রতিবেদনে।

বর্তমানে যে হারে বেকার শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের সংখ্যা ঘরে ঘরে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার ফলে দেশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত নেই। এই সমস্ত বেকার যুবক-যুবতীরা চাকরি না পেয়েও অনেকে ব্যবসা করার কথা চিন্তাভাবনা করলেও ব্যবসা শুরু করতে পারেন না শুধুমাত্র আর্থিক সঙ্গতি নেই বলে। এই সমস্ত বেকার যুবক যুবতীদের কথা চিন্তা করে কেন্দ্রীয় সরকার একটি ট্রেনিং কোর্সের আয়োজন করেছে। ট্রেনিং পিরিয়ড শেষে প্রত্যেকেই একটি সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। এছাড়াও ট্রেনিং চলাকালীন ৩০ হাজার টাকার মতন মাসিক বেতন পাওয়ার সুযোগ থাকছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন প্রকল্পের নাম CSC Business Idea। গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে শহর অঞ্চলের প্রত্যেক বেকার যুবক যুবতী এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। ট্রেনিং শুরু করার জন্য কোনরকম টাকা লাগবে না। একজন বেকার যুবক-যুবতীর ক্যারিয়ার শুরু করার প্রথম ধাপ হলো এই ট্রেনিং। এই ট্রেনিং কোর্স আপনাকে একটি ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। 

আরোও পড়ুন:- ইন্ডিয়ান অয়েলে একাধিক শূন্য পদে নিয়োগ, জানুন আবেদন পদ্ধতির নিয়ম কানুন?

CSC ট্রেনিং কোর্স হলো এমন একটি কোর্স যেটি সরকার অনুমোদিত একটি কোর্স, যেখানে ডিজিটাল মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন রকম কাজ করার ট্রেনিং পাবেন। বর্তমানে বিভিন্ন রকম সরকারি ও বেসরকারি কাজকর্ম ডিজিটাল মাধ্যমেই করা হয়। আর এই ডিজিটাল মাধ্যমে কাজকর্ম করার জন্য প্রচুর কর্মীর প্রয়োজন। এইজন্যই সরকারের পক্ষ থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে কাজ করার প্রক্রিয়া এই ট্রেনিংয়ে শেখানো হবে। আপনি এই কোর্স শিখে নিজেই একটি ব্যবসা শুরু পড়তে পারবেন। ট্রেনিং পিরিয়ড থেকে যে বেতন পাবেন সেই বেতন দিয়ে ব্যবসা শুরু করার সমস্ত রকম মূলধন কিনতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি ব্যবসা শুরু করতে নাও চান, তাহলে এই ট্রেনিং পিরিয়ড থেকে শিক্ষা নিয়ে কোন সংস্থায় চাকরি সুযোগও পাবেন। 

কোন কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে:- ডিজিটাল মাধ্যমে যে সমস্ত কাজ করা হয় সেই সংক্রান্ত সমস্ত কাজেরই এই ট্রেনিং পিরিয়ডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে : আধার ও প্যানকার্ড সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ, সরকারি ভাতা বা স্কলারশিপের আবেদন, কৃষি প্রকল্পের রেজিস্ট্রেশন ও কৃষকদের জন্য সমস্ত সরকারি প্রকল্পে আবেদন, পেনশন ও বিমা সংক্রান্ত কাজ, কলেজ ভর্তি বা চাকরির আবেদন, স্কুল কলেজে ভর্তির আবেদন পত্র, চাকরির অনলাইন আবেদন ইত্যাদি। ট্রেনিং পিরিয়ড শেষে একটি পরীক্ষা নেওয়া হবে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনারা সার্টিফিকেট পাবেন। 

বর্তমান যেহেতু যেমন যে কোন আবেদন করার জন্য আমাদের সাইবার ক্যাফে যেতে হয় এবং অনেক সময় দেখা যায় এই সমস্ত ক্যাফের কর্মীরা সঠিক ভাবে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে না পারার জন্য অনেক সময় ভুল ভ্রান্তি হয়ে যায় সরকারি নিয়মে। এজন্য সরকারের তরফ থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন রকম নিয়মকানুন সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে একটি কোর্স তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আপনি এই সকল কাজগুলোর ট্রেনিং পাবেন, যার ফলে এই কাজ থেকে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম হবে। সাধারণ নাগরিকরা সাইবার ক্যাফে বা এরকম কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারি কাজের জন্য আবেদন সংক্রান্ত কাজ করালেও যদি ভুলভ্রান্তির পরিমাণ অনেক কমবে। 

বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান হবে এবং তারা এই ট্রেনিং সার্টিফিকেট দেখিয়ে যে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ ও পাবেন। ট্রেনিং পিরিয়ডি চলাকালীন বেতনের সুবিধা থাকায় জন্য যুবক যুবতীদের ট্রেনিং পিরিয়ডের উৎসাহ বাড়বে। 

আবেদন করবেন কিভাবে:- আবেদন করার জন্য প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারের csc.gov.in এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। তারপর হোম পেজে থাকা Digital Seva Registration অপশনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন করুন। রেজিস্ট্রেশন করতে হলে আপনার বৈধ ইমেইল আইডি এবং মোবাইল নাম্বার ইনপুট করুন। এরপর আবেদন ফর্ম পূরণ করুন সঠিক তথ্য দিয়ে। এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন আধার কার্ড, বাসস্থান সার্টিফিকেট, কাস্ট সার্টিফিকেট, পারিবারিক আয়ের প্রমাণপত্র, ফটো এবং সিগনেচার দিয়ে ডকুমেন্ট আপলোড করুন। এরপর সাবমিট করে কনফার্মেশন নাম্বার নিজের কাছে রেখে দিন। 

৩০ আগস্ট থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, চলবে ৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ট্রেনিং পিরিয়ড চলবে তিন থেকে ছয় মাস। ট্রেনিং চলাকালীন আপনি আয় করার সুযোগ পাবেন, তাই আর দেরি না করে ঝটপট ট্রেনিং করার জন্য ৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করে ফেলুন। 

কেন্দ্রীয় সরকারের সিএসসি ট্রেনিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন বেকার যুবক-যুবতীর জন্য। বেকার কথাটির সঙ্গে যেমন আত্মসম্মানের একটা প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে, সেভাবে মনোবল ভেঙে যাওয়ার জন্য এই বেকার কথাটি যথেষ্ট। তাই প্রত্যেক শিক্ষিত যুবক যুবতীর এই বেকার তকমা মুছে দেওয়ার জন্যই প্রথম দরকার এই ট্রেনিং পিরিয়ডে প্রশিক্ষণ নেওয়া। সিএসসি ট্রেনিং এমন একটি ট্রেনিং যেটি আপনাকে ডিজিটাল মাধ্যমে বিভিন্ন রকম কাজ করার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকবে। বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ হিসেবে পরিচিত। সরকারি থেকে বেসরকারি প্রত্যেকটি কাজকর্ম ডিজিটাল মাধ্যমে হয়ে থাকে আর এই জন্যই এখন ডিজিটাল মাধ্যমকে কাজে লাগানো সবথেকে উত্তম পন্থা। যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই কোর্স করতে গেলে আপনাকে মোটা টাকা খরচ করতে হবে, সেইখানে সরকার অনুমোদিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে আপনি যদি প্রশিক্ষণ নেন তাহলে কাজ তো শিখবেন অবশ্যই, তার সাথে সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন এবং টেনিং চলাকালীন আয় করার সুযোগ থাকবে। এই আয় করার মাধ্যমে আপনি নিজে পরবর্তীতে চাইলে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। ব্যবসা না করলেও যে কোন প্রতিষ্ঠানে আপনার সার্টিফিকেট দেখিয়ে চাকরির সুযোগ পাবেন, তাই এই কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত সিএসসি কোর্স আপনার জীবনের নতুন আলো দেখাবে নতুন পথের দিশা এনে দেবে। আপনিও যদি একজন বেকার  হয়ে থাকেন তাহলে খুব শীঘ্রই ৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করে আপনার জীবনে বেকারত্বের তকমা একেবারের মতন মুছে ফেলুন।

Leave a Comment

Join Group Join Group