রাজ্য সরকার রাজ্যের জনগণের জন্য বিভিন্ন রকম প্রকল্পের সূচনা করেছেন, যার মাধ্যমে রাজ্যের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো অনেকটাই আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম প্রকল্প গুলি হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বার্ধক্য ভাতা, কৃষক বন্ধু প্রকল্প, শিক্ষাশ্রী, যুবশ্রী, কন্যাশ্রী ইত্যাদি।
এই প্রকল্প গুলোর মাধ্যমে শিশু থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, মহিলা, যুবক এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। পুজোর মাসেই এই সমস্ত প্রকল্পের অনুদান আরো বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এতদিন পর্যন্ত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ ক্যাটাগরির মহিলারা ১০০০ টাকা এবং তপশিলি জাতির মহিলারা ১২০০ টাকা করে মাসে অনুদান পেতেন। তবে বৈঠকে হওয়ার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই এই অনুদানের পরিমাণ ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায় এবং ১২০০ টাকার পরিবর্তে ১৮০০ টাকায় করা হচ্ছে। এই অনুদান বাড়ানোর ফলে নিম্ন মধ্যবিত্ত মহিলাদের আরো অনেকটা সুযোগ সুবিধা বেড়ে যাবে। এখনো অনেক গ্রামীণ অঞ্চলের মহিলারা রয়েছেন, যাঁরা নিজের পায়ে স্বাবলম্বী নন। এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের অনুদান তাদের আর্থিক স্বাবলম্বী করতে সাহায্য করেছে। নিজেদের প্রয়োজনে এবং পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পেরেছেন। অনেক মহিলা প্রত্যেক মাসের অনুদানের টাকা জমিয়ে ছোট ব্যবসা শুরু করেছেন। অনুদান বৃদ্ধি হওয়ার ফলে তাদের এই সমস্ত সুযোগ সুবিধা আরো অনেকটা বেড়ে যাবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
শুধুমাত্র লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নয়, এর পাশাপাশি বার্ধক্য ভাতাও বাড়ানো হবে বলে জানা গিয়েছে। ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বার্ধক্য ভাতা চালু করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এতদিন পর্যন্ত এই প্রকল্পের অনুদানের পরিমাণ ছিল ১০০০ টাকা। পুজোর পরেই এই অনুদানও বৃদ্ধি হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরোও পড়ুন:- Income Tax Penalty: পরপর তিন টাইম ২০,০০০ টাকা ক্যাশে পেমেন্ট দিলেই ১০০ শতাংশ পেনাল্টি।
অন্যদিকে, কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অনুদানের পরিমাণও বাড়ানো হবে। এসব দিয়ে কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্ব্যবহৃত, কীটনাশক ইত্যাদি কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। ঝড় বন্যা বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হলেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়। পুজোর পর থেকে এই প্রকল্পের অনুদান বাবদ ১৫ হাজার টাকা পাবেন রাজ্যের কৃষকরা। কৃষক বন্ধু প্রকল্পে অনুদান বাড়ানোর ফলে কৃষকদের আর্থিক অবস্থার আরো উন্নয়ন হবে।
এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গের যে সমস্ত ব্যক্তি কাজের জন্য অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিলেন অর্থাৎ পরিযায়ী শ্রমিক, তারা যদি অন্য রাজ্যের কাজ হারিয়ে পুনরায় বাংলায় অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসেন, তখন তাদের কোন কর্মসংস্থান না থাকার কথাই। এই সমস্ত কর্মহীন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমশ্রী প্রকল্পের সূচনা করেছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে যতদিন পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা পশ্চিমবঙ্গে থাকা অবস্থায় কাজ পাবেন না অর্থাৎ কর্মহীন থাকবেন, ততদিন সেই পরিযায়ী শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা করে মাসিক অনুদান দেওয়া হবে। এছাড়াও তাদের সন্তানদের সরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু যদি কোন পরিচয় শ্রমিক অন্য রাজ্যে কাজ করতে থাকেন এই সুবিধা তাঁরা পাবেন না। এমনকি যদি পরিচয় শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গের আবার কোন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় তাহলে তিনি এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না।
অর্থাৎ পুজোর মধ্যেই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে অনুদানের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে রাজ্যে জনগণের কথা চিন্তা করে। যেভাবে দিন প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে সেই সাথে অনুদানের পরিমাণ বাড়ানোর কথাও চিন্তা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে জনগণের স্বার্থে তাদের আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যার ফলে আগামীতে উপকৃত হতে চলেছেন লক্ষ লক্ষ আমজনতা।