বর্ষাকাল পেরিয়ে শরৎ কালের আগমন ঘটেছে কিছুদিন আগে। মৌসুমী বায়ু এ বছরের মতন বিদায় জানিয়েছে দুই বঙ্গ থেকে। যদিও বৃষ্টির পূর্বাভাস থেকে রক্ষা পাচ্ছে না রাজ্যবাসী। এদিকে সামনেই রয়েছে দুর্গাপুজো। হাতে গোনা আর কয়েকদিন অপেক্ষা! আর তারপরেই সবাই মেতে উঠবে দুর্গা পুজোর আনন্দে। কিন্তু দুর্গাপূজাতে বৃষ্টি কি মাটি করতে চলেছে পূজার আনন্দ? অনেকেই পূজার সময় বাইরে ভ্রমণের জন্য ভেবে থাকেন। ঘুরতে যাওয়ার কথা বলতেই সবাই পাহাড়কে একেবারে প্রথম পছন্দ হিসেবে ধরে নেয়। এদিকে যে হারে দুই বঙ্গে বৃষ্টি হয়ে চলেছে তার ফলে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দ কি মাটি হতে পারে পূজার সময়? কি বলছে হাওয়া অফিস? জেনে নেওয়া যাক এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে।
বর্ষাকাল চলে গেলেও বৃষ্টির আভাস দুর্গাপূজোতেও আংশিক রয়ে যায়। পুজোর সময় শরতের আকাশে পেজা তুলোর মতন মেঘ ভেসে থাকতে দেখতেই ভালো লাগে। রোদ ঝলমলে শরতের আকাশে যদি ঘন কালো মেঘের সঞ্চার ঘটে, তখনই পুজোর আনন্দ মাটি হওয়ার অশনি সংকেত মনের মধ্যে কড়া নাড়ে। আজ ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার, অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। শুধু দক্ষিণবঙ্গই নয়, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাতেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত মৌসুমী বায়ু হিমালয়ের পাদদেশেই অবস্থান করছে। এছাড়া মধ্য বাংলাদেশে রয়েছে সক্রিয় ঘূর্ণাবর্ত। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর ওড়িশার উপর আরও একটি আপার এয়ার সার্কুলেশন তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে। এর দরুন উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি – এই পাঁচ জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে সপ্তাহ জুড়ে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা – এই চার জেলাতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সোমবার দিনেও ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক জায়গায় জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সপ্তাহ ভর এমনই বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তার সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে বলেও জানিয়েছে হাওয়া অফিস। গরমের প্রাদুর্ভাব কিছুটা কম থাকবে বলেই জানানো হয়েছে।
আরোও পড়ুন:- RRB NTPC UG উত্তর কী 2025 প্রকাশিত, কিভাবে ডাউনলোড করবেন? জেনে নিন বিস্তারিত।
সপ্তাহ জুড়ে ভারী বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জল স্তর কিছুটা বাড়তে দেখা যাবে। তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা নদীতে জলস্তর বাড়বে বলে আশঙ্কা। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের পার্বত্য এলাকায় এমনকি সিকিমেও ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
দেখে নেওয়া যাক ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে সাত দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের নমুনা :
১৫ ই সেপ্টেম্বর সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ২৮°C
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৯ পার্সেন্ট।
১৬ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের আধিক্য থাকবে ৯০ শতাংশ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ থাকবে ৮২ শতাংশ।
১৮ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বৃষ্টি পাতা আধিক্য থাকবে ৬৬ শতাংশ।
১৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের আধিক্য থাকবে ৭৪ শতাংশ।
২০ সেপ্টেম্বর শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ থাকবে ৬৬ শতাংশ।
২১ সেপ্টেম্বর রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ থাকবে ৭৩ শতাংশ।
অতএব হাওয়া অফিসের কথা অনুযায়ী, আগামী ৭ দিন মেঘলা আকাশ এবং কোন কোন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং কোন কোন জেলায় আংশিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।