কেন্দ্রীয় সরকার দেশের জনসাধারণের জন্য বিভিন্ন রকম প্রকল্পের সূচনা করেছেন। এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে দেশের জনসাধারণ আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ই-শ্রম কার্ড ঠিক কোন সুবিধা দিয়ে থাকে? এই কার্ড ব্যবহার করলে আপনি কত টাকা আর্থিক সহায়তা পাবেন? এখনো পর্যন্ত যারা এই কার্ডের সুবিধা পাননি তারা কিভাবে এই কার্ডের জন্য আবেদন করবেন? এই সকল তথ্য নিয়ে থাকছে আজকের এই প্রতিবেদন। কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সকল স্তরের মানুষের জন্য চিন্তাভাবনা করে বিভিন্ন রকম প্রকল্পের সূচনা করেছেন। মূলত ই – শ্রম প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের একটি অভিনব প্রকল্প। এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে দেশের অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্য। অস্থায়ী কথাটির মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে এই সমস্ত শ্রমিকদের কাজের ধরন অস্থায়ী প্রকৃতির। মাসের কোনদিন তাদের কাজ থাকে আবার কোনদিন তাদের কাজ থাকে না। এছাড়াও বৃদ্ধ বয়সে এই শ্রমিকদের কোন পেনশন থাকেনা। এইজন্যই অস্থায়ী শ্রমিকদের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এবং বৃদ্ধ বয়সের কথাকে চিন্তাভাবনা করে কেন্দ্রীয় সরকার ই- শ্রম প্রকল্প চালু করেছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এতদিন পর্যন্ত ১০০০ টাকা করে অস্থায়ী শ্রমিকদের ব্যাংক একাউন্টে দেওয়া হতো। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছেন এই অনুদানের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক ই-শ্রম কার্ড কি :- কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদিত এটি একটি পরিচয় পত্র যেটি দেশের অসংগঠিত এবং অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্যই বরাদ্দ করা হয়েছে। এই কার্ডের মাধ্যমে ৬০ বছর বয়স থেকে শ্রমিকরা প্রত্যেক মাসে পেনশনের মতন আর্থিক সাহায্য পাবেন। এই কার্ডটিতে 12 সংখ্যার ইউনিক আইডি নাম্বার দেওয়া রয়েছে, যেটি শ্রম মন্ত্রণালয়ের শ্রমিক ডেটাবেসে উল্লেখ করা থাকে।
কত পরিমান অনুদান বাড়ানো হয়েছে :- এতদিন পর্যন্ত মাসিক বেতন হিসাবে ১ হাজার টাকা দেওয়া হতো। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে এই অনুদান তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে অর্থাৎ এখন থেকে মাসিক পেনশন হিসাবে ৩০০০ টাকা পেয়ে যাবেন অস্থায়ী শ্রমিকরা।
আরোও পড়ুন:- স্লিপার যুক্ত বন্দে ভারত পাচ্ছে বিহার, ভোটের আগেই বিশেষ উপহার দিচ্ছে কেন্দ্র।
ই- শ্রম কার্ড এর সুবিধা :-
১) এই কার্ড থাকলে আপনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পাবেন।
২) এই কার্ড থাকলে আপনি অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের যে সুবিধা রয়েছে সেগুলোর সুবিধাও পাবেন।
৩) এই কার্ড আরও অন্যান্য কাজের সুযোগ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
৪) 1 বছরের জন্য প্রিমিয়াম দিতে হবে না।
৫) প্রত্যেক অস্থায়ী শ্রমিকদের রেকর্ড শ্রম মন্ত্রণালয়ের ডেটা বেসে সুরক্ষিত থাকবে।
৬) আপনার মৃত্যু হলে বা দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণরূপে অক্ষম হলে 2 লাখ টাকা পাবেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে, আর যদি আপনি যদি দুর্ঘটনায় আংশিকভাবে অক্ষম হন তবে আপনি 1 লাখ টাকা পাবেন।
আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা :-
ই- শ্রম কার্ড ব্যবহারকারীদের যে সমস্ত যোগ্যতা থাকতে হবে :-
১) আবেদনকারী শ্রমিককে অবশ্যই ভারতবর্ষের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২) আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ বছর বা তার উর্ধ্বে।
৩) আবেদনকারীকে অবশ্যই অস্থায়ী কোন কাজের সাথে যুক্ত থাকতে হবে।
৪) আবেদনকারীর কাছে লেবার কার্ড থাকতে হবে।
৫) আদনকারী নিজস্ব একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। ব্যাংক একাউন্টের সাথে অবশ্যই আধার কার্ডের লিং থাকতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি :-
অনলাইন মাধ্যমে আপনি আবেদন করতে পারবেন।
১) সর্ব প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারের eshram.gov.in পোর্টালে যেতে হবে।
২) এরপর রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া হওয়ার পরে পাসওয়ার্ড ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে লগইন করতে হবে।
৩) এরপর যে আবেদন ফর্ম আসবে, সেটা ভালো করে পূরণ করে নিতে হবে।
৪) প্রদত্ত ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
৫) এরপর সাবমিট করলেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
অনলাইন পদ্ধতির ছাড়াও অফলাইন মাধ্যমে আপনি নিকটবর্তী কোনো CSC সেন্টারে গিয়েও ই-শ্রম কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
পেমেন্ট স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি :-
যে সমস্ত উপভোক্তা ই- শ্রম প্রকল্পের টাকা ক্রেডিট হয়েছে কিনা দেখতে ইচ্ছুক তারা কিভাবে স্ট্যাটাস চেক করবেন :-
১) প্রথমেই আপনাকে এই প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
২) এরপর নিজের মোবাইল নাম্বার এবং নিজের ডিটেলস দিয়ে আপনার ই শ্রম একাউন্টে লগইন করতে হবে।
৩) এরপর আপনার প্রোফাইলে গিয়ে ই শ্রম স্ট্যাটাস অপশনটাতে ক্লিক করলে আপনি বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
যে সমস্ত ব্যক্তিদের আগে থেকেই ই-শ্রম কার্ড ছিল, যদি এখন তাদের বয়স ৬০ বছর হয় তাহলে শুধুমাত্র সিএফটি সেন্টারে গিয়ে পেনশন স্কিমের জন্য আবেদন করলেই হবে। এর জন্য ব্যাংক একাউন্ট এবং বয়সের প্রমাণপত্র ও ই-শ্রম কার্ড সিএসটি সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে।
আপনি যদি একজন অস্থায়ী শ্রমিক হয়েও এখনো পর্যন্ত এই কার্ডের জন্য আবেদন না করে থাকেন, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব এই কার্ডটি পাওয়ার জন্য আবেদন করুন। বৃদ্ধ বয়সে মাসিক ৩০০০ টাকা করে পেনশনের এত বড় সুযোগ নইলে হাতছাড়া হয়ে যাবে।