জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সিভিল পরীক্ষা (JE) এবং JKSSB পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হলো। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত জারি করা হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, ২৪ আগস্ট রবিবার ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ করার জন্য জম্মু-কাশ্মীর সরকার পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। ২৯২টি জুনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদের জন্য পরীক্ষায় প্রায় ১৫,০০০ প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিলেন। জম্মু-কাশ্মীরের মোট ৩৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। যদিও জানা যাচ্ছে, ৩৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হলেও একটি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভবপর হয়নি। একদিকে রবিবার দিন আবহাওয়া অবস্থা খুবই খারাপ থাকায় অনেক পরীক্ষা প্রার্থী সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেনি। এছাড়াও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে, যার ফলে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে রীতিমতো হুলস্থুল পড়ে যায়।
শ্রীনগরের কোঠিবাগের একটি সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে JKSSB পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। যদিও সেখানকার এক পরীক্ষার্থী অভিযোগ তোলে, টেলিগ্রামসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার অনেক আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়। যদিও এই অভিযোগকে মান্যতা দেয়নি JKSSB বোর্ড। তারা জানান আবহাওয়ার কারণে যেহেতু একটি কেন্দ্রে পরীক্ষা হতে পারিনি, তাই পুনরায় আবার পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগকে তারা এক কথায় উড়িয়ে দেন। যদিও জানা যাচ্ছে, এই প্রশ্ন ফাঁস ব্যাপার নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে অনেক বিতর্কে সৃষ্টি হয়। বেশিরভাগ প্রার্থীরা JKSSB বোর্ডকে দায়ী করেন, কারণ এর আগেও এই বোর্ডের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে।
আরোও খবর পড়ুন:- গণেশ চতুর্থীর ছুটি ঠিক কবে দেওয়া হবে? ২৬ আগস্ট না ২৭ আগস্ট।
শ্রীনগর কেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বিভাগের (পিডিডি) পদগুলিতে নিয়োগের পরীক্ষা প্রায় এক দশক পরে নেওয়া হয়েছিল এবং তারা এই পরীক্ষার জন্য অনেকটাই কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাই এত কষ্টের পরেও পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় যে সমস্ত পরীক্ষার্থীরা এই প্রশ্নপত্রে ভালো ফল আশা করেছিল তাদেরকে আবার পুনরায় পরীক্ষা দিতে হবে ভেবে অনেকটাই আশাহত হয়ে পড়েছেন। তারা এতটাই নিশ্চিত ছিল যে এইবার অন্তত এই বোর্ড স্বচ্ছতার সাথে পরীক্ষা নেবেন।
প্রসঙ্গত, এর আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির অভিযোগে JKSSB বোর্ডের নাম জড়িয়ে ছিল। ২০২২ সালে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার মতন ঘটনা ঘটে এবং এই কাজে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এইজন্য পুনরায় এই বোর্ড সাব ইন্সপেক্টর, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার এবং ১০০ ফিন্যান্স অ্যাকাউন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট এর নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিলেন। আমার ফের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা সেই আগের ঘটনাটি মনে করিয়ে দিল পরীক্ষার্থীদের।
কাশ্মীরের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি জানিয়েছেন, নির্বাচিত হওয়া সরকারের পক্ষ থেকে এই বোর্ডের এটাই প্রথম নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। কিন্তু বারংবার JKSSB বোর্ডের নামে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ কেন উঠছে এখানেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, এমনটাই বলছেন বিরোধী দলনেতারা। স্বভাবতই JKSSB বোর্ডের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
অন্যদিকে, JKSSB জানিয়েছেন, শুধুমাত্র আবহাওয়ার অবনতির জন্যই পরীক্ষা বাতিল করে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলত এই নিয়ে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক এবং চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে।
পুনরায় আবার কবে পরীক্ষা নেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি বোর্ড। তাদের ওয়েবসাইটে পরবর্তী পরীক্ষার ডেট জানিয়ে দেওয়া হবে বলে আপাতত জানিয়েছেন JKSSB।